32000 Teacher Case: আজ ৩২,০০০ শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানিতে কী কী নতুন তথ্য উঠে এলো? প্রভাবিত হবে তিনটি নিয়োগ

32000 Teacher Case: কলকাতা হাইকোর্টে ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ মামলার ত্রয়োদশ শুনানি সমাপ্ত হয়েছে এবং পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২১শে আগস্ট। আজকের শুনানিতে কিছু নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে যা এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আজকের শুনানির মূল বিষয়গুলো সহজভাবে আলোচনা করব।
টেট দুর্নীতি বনাম নিয়োগ প্রক্রিয়া
এদিনের শুনানির অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল টেট (শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষা) এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা। আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দেন যে, যদিও টেট পরীক্ষায় কিছু অনিয়মের অভিযোগ থাকতে পারে, কিন্তু নিয়োগ বা নির্বাচন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত। তাদের মতে, একক বিচারপতির রায়টি “টেট দুর্নীতি”র উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু মূল মামলায় টেট দুর্নীতির কোনো অভিযোগ ছিল না। এই যুক্তি যদি আদালত মেনে নেয়, তাহলে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।
ওএমআর শিট দুর্নীতি এবং তার প্রভাব
শুনানিতে ২০১২ সালের টেট পরীক্ষার ওএমআর শিট নিয়ে দুর্নীতির বিষয়টি উঠে আসে, যা বর্তমানে অন্য একটি মামলায় বিচারাধীন। যদি এই ওএমআর দুর্নীতি প্রমাণিত হয়, তাহলে তিনটি ভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে:
- ১৬,৫০০ শিক্ষক নিয়োগ
- ৪২,০০০ শিক্ষক নিয়োগ (২০১৪)
- ১১,৭৬৫ শিক্ষক নিয়োগ (২০২২)
এই বিষয়টি মামলাটিকে আরও জটিল করে তুলেছে, কারণ একটি দুর্নীতির প্রভাব একাধিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর পড়তে পারে।
প্রশিক্ষিত প্রার্থী এবং প্যারা-টিচারদের বিষয়
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল প্রশিক্ষিত প্রার্থী এবং প্যারা-টিচারদের মধ্যে নম্বরের পার্থক্য। শুনানিতে বলা হয় যে প্রশিক্ষিত প্রার্থীরা অতিরিক্ত ১৫ নম্বর পান, যেখানে প্যারা-টিচাররা শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য মাত্র ৫ নম্বর পান, যদিও উভয়কেই একই ইন্টারভিউ এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বিচারপতি যদিও জানিয়েছেন যে মূল উদ্বেগ ছিল প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের নিয়ে, প্যারা-টিচারদের নিয়ে নয়।
আদালতের নির্দেশ এবং অন্যান্য যুক্তি
শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের একটি পূর্ববর্তী আদেশের কথা উল্লেখ করা হয়, যেখানে বলা হয়েছিল যে চূড়ান্ত রায় দেওয়ার আগে ক্ষতিগ্রস্ত সকল পক্ষের বক্তব্য শুনতে হবে। এছাড়াও, অন্য একটি হাইকোর্টের আদেশের উদাহরণ দেওয়া হয়, যেখানে বলা হয়েছে যে একবারে ৩২,০০০ চাকরি বাতিল করা যুক্তিসঙ্গত নয় এবং প্রমাণিত অসদাচরণের ভিত্তিতে পৃথকীকরণ সম্ভব। জলপাইগুড়ি জেলার পক্ষ থেকে এক আইনজীবী দাবি করেন যে তাদের জেলায় কোনো ইন্টারভিউ বা আবেদনকারীকে ডাকা হয়নি, তাই তাদের জেলা এই নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়। এছাড়াও, মেধাবী প্রার্থীদের (যারা গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নে অনার্স সহ চাকরি পেয়েছেন) কথাও তুলে ধরা হয় এবং তাদের চাকরি বাতিলের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এদিনের শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানিতে একটি সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মামলাটি এখন কোন দিকে মোড় নেয়, তা দেখার জন্য আমাদের ২১শে আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সমস্ত পক্ষের যুক্তি শোনার পর আদালত কী রায় দেয়, তার ওপরই নির্ভর করছে ৩২,০০০ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ।