পশ্চিমবঙ্গ

Contractual Employees Rights: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বড় ধাক্কা! চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের অধিকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়

Contractual Employees Rights: পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রাজ্যের চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্ট। ১৮ই আগস্ট, ২০২৫-এ, সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দায়ের করা একটি আপিল খারিজ করে দিয়েছে, যা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের অধিকার রক্ষায় একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই রায়ের ফলে, মামলার আবেদনকারী কর্মীরা এখন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সমস্ত আর্থিক এবং পরিষেবা সংক্রান্ত সুবিধা পাবেন।

ঘটনার প্রেক্ষাপট

এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত ক্যাজুয়াল বা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিষয়টি। কলকাতা হাইকোর্ট এর আগে এই কর্মীদের পক্ষে রায় দিয়েছিল এবং তাদের সমস্ত প্রাপ্য আর্থিক ও পরিষেবা সংক্রান্ত সুবিধা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে।

রাজ্য সরকারের যুক্তি

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবী কুণাল চ্যাটার্জি আদালতে যুক্তি দেন যে, এই কর্মীরা চুক্তিভিত্তিক এবং তাদের পদগুলি স্থায়ী নয়। সরকারের দাবি ছিল যে, যেহেতু কোনো স্থায়ী পদের অনুমোদন নেই, তাই তাদের স্থায়ী কর্মীদের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্য সরকার তাদের পক্ষে বিভিন্ন নিয়ম এবং বিজ্ঞপ্তিও আদালতে পেশ করে।

সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ

মামলার শুনানির সময়, বিচারপতি মনোজ মিশ্র রাজ্য সরকারের আইনজীবীর কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “যদি কোনো অনুমোদিত পদই না থাকে, তাহলে রাজ্য সরকার কীভাবে বছরের পর বছর, দশকের পর দশক ধরে কর্মীদের কাজ করিয়ে যাচ্ছে?” আদালত আরও বলে যে, একটি রাজ্য সরকারের উচিত “মডেল এমপ্লয়ার” বা আদর্শ নিয়োগকর্তা হওয়া। এই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আদালত স্পষ্ট করে দেয় যে, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করিয়েও কর্মীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা অনুচিত।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং তার প্রভাব

সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপিলটি “বিলম্বিত ক্ষমার” কারণে খারিজ করে দেয়, যার অর্থ হলো রাজ্য সরকার সময়মতো আপিল দায়ের করতে দেরি করেছিল। এই রায়ের ফলে, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল থাকল। এর প্রধান প্রভাবগুলি হলো:

  • আবেদনকারীদের জয়: এই মামলার নির্দিষ্ট আবেদনকারীরা এখন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো সমস্ত বকেয়া আর্থিক এবং পরিষেবা সংক্রান্ত সুবিধা পাবেন।
  • অন্যান্য কর্মীদের জন্য আশা: যদিও এই রায় শুধুমাত্র এই মামলার আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য, তবে এটি রাজ্যের অন্যান্য অস্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের জন্য একটি নতুন আশার আলো দেখিয়েছে। তারাও ভবিষ্যতে একই ধরনের আইনি পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত হবেন।
  • রাজ্য সরকারের জন্য ধাক্কা: সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা খারিজ হয়ে যাওয়া রাজ্য সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এর ফলে সরকারের উপর একটি আর্থিক এবং প্রশাসনিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

এই রায়টি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি প্রমাণ করে যে, দীর্ঘ সময় ধরে সেবা প্রদানকারী কর্মীদের প্রতি রাজ্যের একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button