Primary Teacher Recruitment: কলকাতা হাইকোর্টের বড় রায়: প্রাথমিকে চাকরি পাচ্ছেন বহু প্রার্থী, নির্দেশ বিচারপতির
Primary Teacher Recruitment: কলকাতা হাইকোর্ট ফের একবার প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করল। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে ২০০৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বহু প্রার্থী চাকরির সুযোগ পেতে চলেছেন। বিচারপতি বিভাস পট্টনায়ক একটি মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দিয়েছেন, যা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এক বড় স্বস্তির খবর নিয়ে এসেছে।
মামলার প্রেক্ষাপট ও অভিযোগ
এই মামলাটি মূলত ২০০৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে দায়ের করা হয়েছিল। রাজ্যের চারটি জেলা— মালদহ, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আইনি জটিলতা চলছিল। মামলাকারীদের প্রধান অভিযোগ ছিল যে, প্যানেল প্রকাশ এবং সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব ছিল। এমনকি ইন্টারভিউ না দেওয়া বা অত্যন্ত কম নম্বর প্রাপ্ত প্রার্থীদেরও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
আদালতে সওয়াল-জবাব
বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের এজলাসে এই মামলার শুনানিপর্বে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়।
- ডি.পি.এস.সি-র (DPSC) যুক্তি: জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ২০০৯ সালের ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া অনেক আগেই সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে এবং বর্তমানে নতুন করে কোনও শূন্যপদ নেই। তাই এত বছর পর নতুন করে চাকরির দাবি বা রিট পিটিশন গ্রহণযোগ্য নয় (Not Maintainable)।
- মামলাকারীদের যুক্তি: মামলাকারীদের আইনজীবী সুবীর সান্যাল জানান, তাঁর মক্কেলরা ২০১৯ সালেই প্যানেল প্রকাশের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনি তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেন যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এবং অযোগ্য প্রার্থীদেরও চাকরি দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মান্থার রায় ও কাট-অফ ডেট
শুনানির সময় বিচারপতি রাজশেখর মান্থার দেওয়া আগের একটি রায়ের প্রসঙ্গ অত্যন্ত গুরুত্ব পায়। ২০২৪ সালের ২৫শে এপ্রিল বিচারপতি মান্থা একটি নির্দিষ্ট ‘কাট-অফ ডেট’ (Cut-off Date) উল্লেখ করেছিলেন। নির্দেশ ছিল, ওই তারিখের আগে যারা নিজেদের অধিকারের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন, তাদের নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। আদালত পুরো প্যানেল বাতিল না করে, অনিয়মগুলিকে একপাশে রেখে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের পথ সুগম করার পক্ষে মত দিয়েছিল।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনআদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি বিভাস পট্টনায়ক রায় দেন যে, যেহেতু বর্তমান মামলাকারীরা বিচারপতি মান্থার নির্ধারিত কাট-অফ ডেটের অনেক আগেই (২০১৯ সালে) মামলা করেছিলেন, তাই তাদেরও সমতুল্যভাবে (Similarly) বিবেচনা করতে হবে।
এই বিশেষ ক্ষেত্রে মেধা তালিকার চেয়েও ‘লিগ্যাল রাইট’ বা আইনি অধিকার প্রয়োগের সময়কালকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, মালদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে নির্দিষ্ট মামলাকারীদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। এর ফলে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বহু যোগ্য প্রার্থী প্রাথমিকে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের সুযোগ পেতে চলেছেন।