AICPI in DA Case: রাজ্যের জালেই কি ফেঁসে গেল রাজ্য? ডিএ মামলায় আজ AICPI নিয়ে মোড় ঘোরানো শুনানি

AICPI in DA Case: রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলার শুনানিতে আজ মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল সর্বভারতীয় উপভোক্তা মূল্য সূচক বা All India Consumer Price Index (AICPI)। মামলাকারীদের পক্ষ থেকে জোরালো সওয়াল করা হয় যে, এই AICPI-এর ভিত্তিতেই ডিএ গণনা করা উচিত। দিনের প্রথমার্ধে এই যুক্তিই কার্যত মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আসুন বিস্তারিত জেনে নিই, আজ আদালতে AICPI নিয়ে ঠিক কী আলোচনা হল।
AICPI এবং ROPA 2009: মূল যুক্তি কী ছিল?
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আইনজীবী, শ্রী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম, শুনানির শুরুতেই ডিএ গণনার ভিত্তি হিসেবে AICPI-কে তুলে ধরেন। তিনি আদালতের সামনে যুক্তি দেন যে, মহার্ঘ ভাতা কোনো দয়ার দান নয়, এটি কর্মচারীদের অধিকার। এবং এই অধিকারের ভিত্তি হল মূল্যবৃদ্ধি, যা AICPI দ্বারা নির্ধারিত হয়।
তাঁর সওয়ালের মূল ভিত্তি ছিল ROPA 2009 (Revision of Pay and Allowances)। তিনি দেখান:
- ৫৩৬ সূচকের রহস্য: ROPA 2009-এ ডিএ গণনার জন্য একটি ৫৩৬ গড় সূচকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আইনজীবী প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে এই ৫৩৬ সূচকটি আকাশ থেকে পড়েনি। এটি সরাসরি AICPI থেকে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্য সরকার তাদের নিজস্ব নিয়মেই AICPI-কে ডিএ গণনার ভিত্তি হিসেবে মেনে নিয়েছে।
- কেন্দ্র ও রাজ্যের নীতির সংযোগ: তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এই AICPI-এর ভিত্তিতেই তাদের কর্মচারীদের ডিএ দিয়ে থাকে। যখন কেন্দ্রের ডিএ ১২% ছিল, তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার মাত্র ২% ডিএ দিয়েছে, যা ROPA 2009-এর মূল ভাবনার পরিপন্থী।
আদালতের প্রশ্ন এবং আইনজীবীর জবাব
এই সওয়াল-জবাবের সময় বিচারপতিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা জানতে চান, AICPI-এর ভিত্তিতে ডিএ দেওয়াটা কি রাজ্যের জন্য বাধ্যতামূলক? অর্থাৎ, রাজ্য সরকার কি কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে আইনত বাধ্য?
উত্তরে শ্রী সুব্রহ্মণ্যম এক অকাট্য যুক্তি দেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার যখন তাদের পে কমিশনে (ROPA 2009) AICPI-এর সূচককে মান্যতা দিয়েছে, তখন সেই অনুযায়ী ডিএ না দেওয়াটা দ্বিচারিতা। তাঁর মূল বক্তব্য ছিল, রাজ্য সরকার নিজেই নিজেদের তৈরি নিয়ম লঙ্ঘন করছে। যেহেতু ROPA 2009-এর ডিএ গণনার নিয়মটি AICPI-এর সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত, তাই সেই অনুযায়ী ভাতা প্রদান করা রাজ্যের কর্তব্য।
আলোচনার সারমর্ম
আজকের শুনানির পর এটা স্পষ্ট যে, ডিএ মামলা এখন আর শুধু টাকা-পয়সার অঙ্কে সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন আইনের বিশ্লেষণ এবং রাজ্যের নিজস্ব নিয়ম মানার দায়বদ্ধতার উপর দাঁড়িয়ে আছে। মামলাকারীদের পক্ষ থেকে সফলভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে যে, AICPI হল ডিএ গণনার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। যদিও মামলা এখনও চলছে এবং চূড়ান্ত রায় আসা বাকি, তবে আজকের AICPI-কেন্দ্রিক আলোচনা নিঃসন্দেহে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মনোবল বাড়িয়েছে।