BLO Work Guidelines: বিএলও-দের জন্য কড়া নির্দেশিকা! ২০২৬ পর্যন্ত ফুল টাইম কাজ? শিক্ষকদের কী করতে হবে জানুন
BLO Work Guidelines: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্বাচন আধিকারিক এবং জেলাশাসকের দপ্তর থেকে রাজ্যের সমস্ত বিএলও (Booth Level Officer)-দের উদ্দেশ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর (SIR) ২০২৬-কে সামনে রেখে এই নির্দেশিকায় বিএলও-দের কাজের পরিধি এবং সময়সীমা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। রাজ্যের সরকারি স্কুলের শিক্ষক, পার্শ্ব-শিক্ষক এবং অন্যান্য সরকারি কর্মচারীরা, যারা বিএলও হিসেবে নিযুক্ত আছেন, তাদের এই নতুন নিয়মাবলী কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
বিএলও-দের নতুন দায়িত্ব ও কর্মপদ্ধতি
নির্বাচন কমিশনের সংশোধিত সময়সূচী অনুযায়ী, বিএলও-দের কাজের চাপ এবং দায়িত্ব উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তাদের নিম্নলিখিত কাজগুলি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করতে হবে:
- ক্লেম এবং অবজেকশন নিষ্পত্তি: সাধারণ মানুষের তরফ থেকে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত যেসব দাবি (Claims) এবং আপত্তি (Objections) জমা পড়ছে, সেগুলি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রতিটি কেসের ক্ষেত্রে বিএলও-দের সরেজমিনে তদন্ত বা ফিল্ড ভেরিফিকেশন করা বাধ্যতামূলক।
- নোটিশ বিলি করা: ভোটার তালিকায় যাদের তথ্যে গরমিল রয়েছে বা যারা প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেননি, তাদের নামে ইস্যু করা নোটিশ বিএলও-দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিতে হবে।
- শুনানিতে উপস্থিতি: দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য যখন হিয়ারিং বা শুনানির আয়োজন করা হবে, তখন বিএলও-দের সেখানে সশরীরে উপস্থিত থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও নথি দিয়ে আধিকারিকদের সহায়তা করতে হবে।
- ফিল্ড ভেরিফিকেশন: ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য যাচাই করা এবং গ্রাউন্ড লেভেলে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা বিএলও-দের অন্যতম প্রধান কাজ।
লজিক্যাল ডিসক্রিপেন্সি এবং তথ্য যাচাইকরণ
নির্বাচন কমিশন এবার প্রযুক্তির সহায়তায় ভোটার তালিকার ত্রুটি বিচ্যুতি ধরার চেষ্টা করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (AI)-এর মাধ্যমে তালিকায় বেশ কিছু ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপেন্সি’ বা অযৌক্তিক তথ্য ধরা পড়েছে। যেমন, বয়সের সঙ্গে বাবার নামের তথ্যের অসামঞ্জস্য ইত্যাদি। এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য বিএলও-দের যা করতে হবে:
১. সংশ্লিষ্ট ভোটারের বাড়ি গিয়ে ফিল্ড এনকোয়ারি করা।
২. তথ্যের সত্যতা যাচাই করে সঠিক প্রমাণ সংগ্রহ করা।
৩. স্বাক্ষরসহ প্রাসঙ্গিক নথিপত্র (Relevant Documents) সংগ্রহ করা।
৪. বিএলও অ্যাপের (BLO App) মাধ্যমে সেই সঠিক তথ্য ও নথি আপলোড করা।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনকাজের সময়সীমা এবং অ্যাপ পরিচালনা
প্রশাসনিক নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই কর্মযজ্ঞ ২০২৬ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে, যেদিন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। এই দীর্ঘ সময়কাল জুড়ে বিএলও-দের নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে বিএলও অ্যাপটি পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ প্রতিনিয়ত অ্যাপে নতুন নতুন আপডেট আসছে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই কাজগুলি সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি ফর্ম ৬, ফর্ম ৭ এবং ফর্ম ৮-এর রুটিন কাজও চালিয়ে যেতে হবে।
প্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতি বিশেষ নির্দেশ
নোটিফিকেশনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, স্কুল বা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের (Head of Institutions) এই কাজে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। যেহেতু অনেক সহকারী শিক্ষক এবং পার্শ্ব-শিক্ষক বিএলও-র দায়িত্বে আছেন, তাই ডিআই (DI) এবং এডিআই (ADI)-দের মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন নির্বাচনী কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য বিএলও-দের প্রয়োজনীয় ছাড় দেওয়া হয়। তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব বা অ্যাসাইনড টাস্ক (Assigned Task) যাতে তারা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। যদিও এই নির্দেশিকাটি প্রাথমিকভাবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রেক্ষাপটে সামনে এসেছে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলার বিএলও-দের ক্ষেত্রেই এই নিয়মাবলী সমানভাবে প্রযোজ্য।