ডিএ

DA Arrears: বকেয়া DA কি আরও পিছিয়ে যাবে? ‘ব্যাখ্যা’ চাইতে ফের সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য সরকার

DA Arrears: পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা (DA) মামলা এক নতুন দিকে মোড় নিতে চলেছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ এবং পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী রায়ের পরেও বকেয়া ডিএ নিয়ে জটিলতা অব্যাহত। সম্প্রতি নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার এই বিষয়ে আরও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার জন্য পুনরায় দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে। কিন্তু কেন এই পদক্ষেপ? এর ফলে কি সরকারি কর্মীদের বকেয়া পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হবে? আসুন, বিষয়টি সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক।

কেন আবার সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য?

অর্থ দফতরের আধিকারিকদের মতে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বকেয়া মেটানোর প্রস্তুতি শুরু হলেও কিছু পদ্ধতিগত সমস্যা দেখা দিয়েছে। সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য আদালতের নির্দেশ অমান্য করা নয়, বরং নির্দেশটি সঠিকভাবে পালন করার জন্য কিছু বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া।

নবান্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, রাজ্য সরকার মূলত দুটি কারণে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছে:

  • নির্দেশের ব্যাখ্যা: মহার্ঘভাতা ঠিক কী ভাবে এবং কোন পদ্ধতিতে মেটাতে হবে, সেই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের কাছে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। এতে সরকারের নির্দেশ পালন করতে সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
  • নির্দেশের পরিবর্তন (Modification): কিছু নির্দেশের সংশোধন বা ‘মডিফিকেশন’-এর জন্য আবেদন জানানো হতে পারে। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বকেয়ার ২৫ শতাংশ ডিএ দেওয়ার যে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, সেটির পুনর্বিবেচনার জন্য কোনও আবেদন করা হচ্ছে না

ঘটনার প্রেক্ষাপট

এই আইনি লড়াইয়ের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। আসুন একনজরে দেখে নিই মূল ঘটনাপ্রবাহ:

  • ২০ মে, ২০২২: কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘভাতা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
  • হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ: রাজ্য সরকার এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
  • ১৬ মে, ২০২৫: শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে জানায় যে, রাজ্যকে বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে হবে।

এই নির্দেশের পরেই রাজ্য সরকার টাকা মেটানোর প্রস্তুতি শুরু করে, কিন্তু এখন আবার নতুন করে আইনি পরামর্শের পথে হাঁটছে তারা।

  DA Case Update: ডিএ মামলায় নাটকীয় মোড়! সময়সীমা শেষের দিনে সুপ্রিম কোর্টে মেনশনিং রাজ্যের

কর্মীদের আশঙ্কা বনাম সরকারের যুক্তি

রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে সরকারি কর্মীদের একাংশের মধ্যে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, এটি আসলে সময় নষ্ট করার একটি কৌশল। আইনি জটিলতার অজুহাত দেখিয়ে সরকার ডিএ দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করতে চাইছে। তাঁদের প্রশ্ন, যখন সুপ্রিম কোর্ট একটি সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, তখন আবার নতুন করে ব্যাখ্যার প্রয়োজন কেন?

অন্যদিকে, সরকারের যুক্তি হলো, বিপুল সংখ্যক কর্মীর বকেয়া মেটানোর বিষয়টি একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই ভবিষ্যতে যাতে কোনও আইনি সমস্যা না হয়, তার জন্য আগে থেকেই সমস্ত দিক স্পষ্ট করে নেওয়া প্রয়োজন। উল্লেখ্য, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে, তাই রাজ্য আবেদন জানালেও শুনানি শুরু হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

সব মিলিয়ে, রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতার ভবিষ্যৎ আরও একবার আইনি প্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ল। সরকারের এই পদক্ষেপ কি সত্যিই স্বচ্ছতা আনার জন্য, নাকি সময়ক্ষেপের কৌশল, তার উত্তর সময়ই দেবে। আপাতত, লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মী তাকিয়ে রয়েছেন শীর্ষ আদালতের দিকে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button