DA Case: কাটমানি না খেয়ে এবার রাস্তায় নামুন কর্মচারীরা! একি বললেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য?

DA Case: ডিএ মামলা নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান কবে হবে, সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে। এই পরিস্থিতিতে ডিএ মামলা, রাজ্যের দুর্নীতি এবং অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করলেন আইনজীবী তথা রাজনীতিবিদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্যে উঠে এলো একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ এবং কর্মীদের জন্য বিশেষ বার্তা।
ডিএ মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানান যে ডিএ মামলার শুনানি বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে বেঞ্চ পরিবর্তনের কারণে। তাঁর মতে, রেজিস্ট্রি বিভাগের ভুলের কারণে এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক নয় এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ ৯ বা ১০ তারিখে পড়তে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, বিচারব্যবস্থা ধীরগতিতে চললেও এখনও তার অস্তিত্ব রয়েছে, যা দেশকে সম্পূর্ণভাবে মোদী-অমিত শাহের শাসনে পরিণত হওয়া থেকে আটকে রেখেছে। তিনি সরকারের ডিএ দেওয়ার অনীহা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, কর্মীদের ন্যায্য দাবি মেটাতে সরকারের এত গড়িমসি কেন?
দুর্নীতির অভিযোগে সরাসরি নিশানা
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য রাজ্যের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন এবং এর জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেছেন। তাঁর মতে, রাজ্যের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অংশগ্রহণ ছাড়া এত বড় দুর্নীতি সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রীর অজান্তে দুর্নীতি হচ্ছে, এই ধারণাটিকে তিনি বাড়ির মালিকের অজান্তে চুরির সঙ্গে তুলনা করে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, “এই রাজ্য দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ” এবং এর মাথায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। তিনি সাধারণ মানুষের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যে, ভোট দেওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকে বাছছেন, তাদের চরিত্র সম্পর্কে ভাবা উচিত। যতদিন মানুষ সচেতনভাবে ভোট না দেবে, ততদিন এই ভোগান্তি চলবে।
কর্মীদের প্রতি বার্তা ও পরামর্শ
রাজ্য সরকারি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বার্তা অত্যন্ত স্পষ্ট। তিনি বলেন:
- পথে নামার ডাক: দাবি আদায়ের জন্য কর্মীদের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান তিনি। তাঁর মতে, কিছু কর্মী যদি “কাটমানি”-কে বেশি গুরুত্ব দেন, তবে সাফল্য পাওয়া কঠিন হবে।
- পুলিশি প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি: দাবি আদায়ের লড়াইয়ে প্রয়োজনে পুলিশের প্রতিরোধ মোকাবিলা করার জন্যও কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি।
- ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন: তাঁর কথায়, ঐক্যবদ্ধ এবং আপোষহীন আন্দোলন ছাড়া কর্মীদের ন্যায্য ডিএ এবং অন্যান্য দাবি আদায় করা সম্ভব নয়।
সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, সরকার যখন দুর্গাপূজার অনুদানের জন্য বিপুল অর্থ বরাদ্দ করতে পারে, তখন কর্মীদের ডিএ দেওয়ার টাকা থাকে না কেন? তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন যে, সরকার নিজের দুর্নীতিগ্রস্ত এজেন্ডা চালিয়ে যাবে এবং জনগণের সমর্থনও আশা করবে। এই দ্বিচারিতা রাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য বিপদজনক বলে তিনি মনে করেন।
সব মিলিয়ে, বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের এই মন্তব্যগুলি রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ডিএ আন্দোলন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর এই জোরালো সওয়াল আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার।