DA Case Today: ব্রেকিং নিউজ: ডিএ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আজ কী ঘটল? জানুন বিস্তারিত!

DA Case Today: পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের বহু প্রতীক্ষিত মহার্ঘ ভাতা (DA) মামলার মেনশন শুনানি আজ, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে সুপ্রিম কোর্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই শুনানি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যেখানে রাজ্যের পক্ষ থেকে তাদের লিখিত জমা পেশ করা হয় এবং কর্মীদের পক্ষ থেকে পালটা যুক্তি উপস্থাপনের প্রস্তুতির কথা জানানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কারলের বেঞ্চে এই মামলার মেনশনিং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়, যা নিয়ে রাজ্য এবং কর্মী উভয় পক্ষই তাদের নিজেদের জয়ের বিষয়ে আশাবাদী।
সুপ্রিম কোর্টে আজকের শুনানির মূল বিষয়বস্তু
আজকের শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল মহাশয় রাজ্য সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন। তাঁর মূল যুক্তির কেন্দ্রবিন্দু ছিল অল-ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI) মেনে মহার্ঘ ভাতা প্রদানের বিষয়টি। তিনি সুপ্রিম কোর্টকে জানান যে:
- দেশের মাত্র চারটি রাজ্য বর্তমানে AICPI মেনে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করে।
- এর আগে, ১০টি রাজ্যকে AICPI অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা তা মানেনি।
- রাজ্য সরকার আজ তাদের চূড়ান্ত লিখিত জমা দিয়েছে, যা জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল।
কপিল সিবাল মহাশয় মূলত এই উদাহরণগুলির মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে AICPI মেনে ডিএ প্রদান করা সমস্ত রাজ্যের জন্য বাধ্যতামূলক নয় এবং পশ্চিমবঙ্গের ডিএ প্রদানের পদ্ধতি অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
কর্মচারী সংগঠনের প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপ
রাজ্যের আইনজীবীর যুক্তির পরেই, কর্মচারীদের সংগঠনগুলির (ইউনিটি ফোরাম এবং কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ) আইনজীবী করুণা নন্দী ম্যাডাম তাঁদের বক্তব্য পেশ করেন। তিনি জানান যে, রাজ্যের লিখিত জমা পাওয়ার পর, তাঁরা এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের পালটা যুক্তি এবং লিখিত সাবমিশন আদালতে জমা দেবেন। এটি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একটি দৃঢ় পদক্ষেপ। কর্মচারীদের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে যে, তাদের পালটা যুক্তিগুলি রাজ্যের দেওয়া যুক্তির বিপক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী হবে এবং তাদের দাবিকে আরও জোরালো করবে।
মামলার বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ
আজকের মেনশনিং প্রক্রিয়ার পর, মামলার রায় আপাতত স্থগিত (Reserved) রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, এখন শুধুমাত্র চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষা। বিচারপতি সঞ্জয় কারলের বেঞ্চে খুব অল্প সময়ের জন্য এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রাজ্যের পক্ষ থেকে জমা দেওয়ার পর, কর্মীরা তাদের পালটা যুক্তি জমা দেবেন এবং তারপরেই সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবে।
উভয় পক্ষই এই মামলায় নিজেদের জয় নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। রাজ্য সরকার বিশ্বাস করে যে, তাদের উপস্থাপিত যুক্তি এবং অন্যান্য রাজ্যের ডিএ প্রদানের পদ্ধতির উদাহরণ তাদের পক্ষে রায় আনতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, সরকারি কর্মচারীরাও মনে করেন যে, তাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবি এবং আদালতের পূর্ববর্তী নির্দেশাবলী তাদের পক্ষে রায় এনে দেবে। এই মামলার রায় পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারীর আর্থিক ভবিষ্যতের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে, তাই সকলের চোখ এখন সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের দিকে।
এটি শুধু একটি আইনি লড়াই নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান এবং অধিকারের সঙ্গে জড়িত একটি গভীর সংবেদনশীল বিষয়। চূড়ান্ত রায় যা-ই হোক না কেন, এই মামলা নিঃসন্দেহে রাজ্যের প্রশাসনিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।