DA Rate: বিশিষ্ট আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের এই যুক্তিতে শুধু বকেয়া ডিএ নয়, বর্তমান ডিএও পাবেন AICPI অনুসারে

DA Rate: রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা (DA) নিয়ে দীর্ঘদিনের লড়াই এখন এক নতুন মোড় নিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে চলমান মামলায়, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষের বিশিষ্ট আইনজীবী শ্রী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম যে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন, তাতে আশার আলো দেখছেন অনেকে। এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রাজ্য সরকারেরই একটি পুরোনো বিজ্ঞপ্তি এবং তার সঙ্গে সর্বভারতীয় উপভোক্তা মূল্য সূচক (AICPI)-এর সরাসরি সম্পর্ক। আসুন, আমরা এই পুরো বিষয়টি সহজভাবে বুঝে নিই।
বিতর্কের মূল কারণ: ROPA 2009
রাজ্য সরকার ২০০৯ সালে যে ROPA (Revision of Pay and Allowances) বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, সেখানেই এই বিতর্কের বীজ লুকিয়ে আছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল যে, ১৯৮২ সালের তুলনায় জানুয়ারী ১, ২০০৬-এ জিনিসপত্রের দাম ৫.৩৬ গুণ বেড়েছে। অর্থাৎ, ১৯৮২ সালে যে জিনিসের দাম ১০০ টাকা ছিল, ২০০৬ সালে তা ৫৩৬ টাকা হয়েছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষের বিশিষ্ট আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের মতে, এই ৫৩৬ সংখ্যাটিই আসলে সর্বভারতীয় উপভোক্তা মূল্য সূচক (AICPI)।
আইনজীবীর যুগান্তকারী যুক্তি
সুপ্রিম কোর্টে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষের আইনজীবী, গোপাল সুব্রহ্মণ্যম, এই বিষয়টিই তুলে ধরেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, রাজ্য সরকার যখন নিজেই স্বীকার করছে যে DA-র ভিত্তি হল এই মূল্য সূচক, তখন সেই সূচক অনুযায়ীই DA দেওয়া উচিত। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় সরকার যে হারে DA বাড়ায়, রাজ্য সরকারেরও সেই হারেই বাড়ানো উচিত।
গণনার সহজ ব্যাখ্যা
একটি সহজ গণনার মাধ্যমে দেখা যাক, কীভাবে ROPA 2009-এর ৫৩৬ সংখ্যাটি AICPI-এর সঙ্গে যুক্ত।
- ১ এপ্রিল, ২০০৮: কেন্দ্রীয় সরকার যখন ১২% DA ঘোষণা করে, তখন AICPI বেড়ে দাঁড়ায় ৬০৫। ROPA-র ভিত্তি ৫৩৬ ধরলে, এই বৃদ্ধি প্রায় ১২.৮৭%, যা ১২%-এর খুব কাছাকাছি।
- ১ জানুয়ারী, ২০০৯: কেন্দ্রীয় সরকার DA বাড়িয়ে ২২% করে। সেই সময় AICPI ছিল ৬৫৬। এক্ষেত্রেও, ৫৩৬-এর ভিত্তিতে এই বৃদ্ধি প্রায় ২২.৩৮%।
- ১ জানুয়ারী, ২০১০: কেন্দ্রীয় DA বেড়ে ৩৫% হয়, এবং AICPI দাঁড়ায় ৭২৬। এখানেও বৃদ্ধি প্রায় ৩৫.৬৩%।
এই গণনা থেকে স্পষ্ট যে, রাজ্য সরকারের ROPA বিজ্ঞপ্তি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের DA বৃদ্ধির মধ্যে একটি সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। আইনজীবীরা এই তথ্যকে হাতিয়ার করেই আদালতে লড়াই করছেন।
কর্মীদের জন্য এর অর্থ কী?
যদি সুপ্রিম কোর্ট এই যুক্তি মেনে নেয়, তাহলে রাজ্য সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে DA পেতে পারেন। এর ফলে, শুধুমাত্র বকেয়া DA-ই নয়, ভবিষ্যতেও কেন্দ্রীয় হারে DA পাওয়ার একটি সম্ভাবনা তৈরি হবে। এই মামলাটি তাই শুধুমাত্র কিছু টাকার লড়াই নয়, এটি রাজ্য সরকারি কর্মীদের অধিকারের লড়াই। এই মামলার রায় পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মীর জীবনে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।