Dearness Allowance Case: সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের নতুন হলফনামা, ডিএ মামলার সর্বশেষ আপডেট

Dearness Allowance Case: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলা এক নতুন মোড় নিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে, যা আসন্ন শুনানিতে তাদের যুক্তির ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। এই হলফনামায় রাজ্য সরকার ডিএ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। আসুন, এই হলফনামার মূল বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
ডিএ প্রদান এবং বকেয়া সংক্রান্ত দাবি
রাজ্য সরকার তাদের হলফনামায় দাবি করেছে যে জুন ২০০৬ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত কর্মচারীকে ডিএ প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে যে দাবি করা হয়েছিল যে এই সময়ে কোনো ডিএ বা বৃদ্ধি দেওয়া হয়নি, তা সরকার সম্পূর্ণভাবে খণ্ডন করেছে।
- সরকার জুন ২০০৬ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত ডিএ প্রদানের একটি বিস্তারিত তালিকা পেশ করেছে, যেখানে ৫০% ডিএ-কে ডিয়ারনেস পে-তে অন্তর্ভুক্ত করার কথাও উল্লেখ রয়েছে।
- তাদের মতে, এই সময়কালে ডিএ প্রদানে কোনো ফাঁক ছিল না এবং সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ROPA 2009-এর ব্যাখ্যা
রাজ্য সরকার আরও স্পষ্ট করেছে যে ROPA 2009-এ উল্লিখিত ১লা এপ্রিল ২০০৮ থেকে প্রকৃত অর্থ প্রদানের বিষয়টি পূর্ববর্তী ডিএ প্রদানকে অস্বীকার করে না। তাদের যুক্তি অনুযায়ী:
- ROPA 2009 শুধুমাত্র বেতন কাঠামো সংশোধনের জন্য একটি আইনগত পরিকাঠামো প্রদান করে, কিন্তু এটি ডিএ বা অন্যান্য ভাতার জন্য কোনো অধিকার তৈরি করে না।
- ROPA 2009-এ ‘বিদ্যমান বেতন’ (basic pay, dearness pay, এবং dearness allowance সহ) শুধুমাত্র সংজ্ঞার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে, এটি ভবিষ্যতের কোনো বাধ্যবাধকতা বা অধিকার তৈরি করে না।
স্ট্যাটিক বনাম ডাইনামিক ডিএ
হলফনামায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যে ROPA 2009-এর অধীনে ডিএ ‘স্ট্যাটিক, ডাইনামিক নয়’। এর অর্থ হলো, এই ডিএ-এর কোনো ভবিষ্যৎ সংযোগ নেই। তবে, অন্যান্য ভাতাগুলিকে ডাইনামিক হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং সেগুলি রাজ্যের বিবেচনার ভিত্তিতে প্রদান করা হয়।
ডিএ নির্ধারণের ভিত্তি
সরকারের মতে, ডিএ-র হার কোনো নির্দিষ্ট সূচক বা সূত্রের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয় না। এটি রাজ্যের আর্থিক ক্ষমতা এবং রাজস্ব নীতির উপর নির্ভর করে।
- ডিএ-র হার সূচকের গড় থেকে উদ্ভূত নয় এবং ভবিষ্যতেও সংশোধিত সূচকের গড়ের উপর ভিত্তি করে হবে না।
- রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের ডিএ হারের সাথে সমতা বজায় রাখতে বাধ্য নয়, কারণ ডিএ-র হার উপলব্ধ তহবিল এবং আর্থিক ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে স্থির করা হয়।
অন্যান্য শহরের ডিএ হারের তুলনা
দিল্লি এবং চেন্নাইয়ের কর্মচারীরা কেন ভিন্ন হারে ডিএ পান, তার ব্যাখ্যাও সরকার দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাদের মতে, এই শহরগুলিতে জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় এবং মুদ্রাস্ফীতির কারণে ডিএ-র হার বেশি। সরকার আরও স্পষ্ট করেছে যে চেন্নাই তামিলনাড়ু সরকারের ডিএ হার গ্রহণ করেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নয়।
রাজ্য সরকারের এই হলফনামা ডিএ মামলায় তাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করার একটি প্রচেষ্টা। এখন দেখার বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট এই যুক্তিগুলিকে কীভাবে গ্রহণ করে এবং মামলার রায় কোন দিকে গড়ায়। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা অধীর আগ্রহে এই মামলার চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন।