e-passport India: ভারতে চালু হল ই-পাসপোর্ট! লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর দিন শেষ? জানুন আবেদন প্রক্রিয়া ও সমস্ত সুবিধা
e-passport India: ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ প্রক্রিয়াকে আরও আধুনিক ও সুরক্ষিত করতে ভারত সরকার এক বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট (e-passports) চালু করা হয়েছে। এই নতুন প্রযুক্তির পাসপোর্ট শুধুমাত্র নিরাপত্তাই বাড়াবে না, বরং আন্তর্জাতিক ভ্রমণের মান বজায় রেখে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াকেও দ্রুততর করবে। এই উদ্যোগ আগামী দিনে ভারতীয়দের বিদেশ ভ্রমণের পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ই-পাসপোর্ট আসলে কী?
ই-পাসপোর্ট দেখতে অনেকটা প্রচলিত ভারতীয় পাসপোর্টের মতোই, তবে এর পিছনের কভারে একটি ইলেকট্রনিক চিপ লাগানো থাকে। এই চিপের মধ্যে পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত এবং বায়োমেট্রিক তথ্য, যেমন আঙুলের ছাপ, মুখের ছবি (face recognition data) এবং একটি ডিজিটাল স্বাক্ষর সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষণ করা থাকে।
এই প্রযুক্তি নিশ্চিত করে যে পাসপোর্টে ছাপানো তথ্যের সাথে চিপের ভিতরের ডেটা হুবহু এক। এর ফলে পাসপোর্ট নকল করা বা এর সাথে কোনো রকম কারচুপি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ই-পাসপোর্টগুলিকে সহজে চেনার জন্য এর কভারের উপর একটি বিশেষ সোনালী রঙের প্রতীক চিহ্ন রয়েছে। এই ইলেকট্রনিক চিপের সাহায্যে বিমানবন্দরে যাত্রীদের তথ্য দ্রুত স্ক্যান এবং যাচাই করা সম্ভব হয়, যা ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াকে অনেক দ্রুত করে তোলে। এর ফলে যাত্রীদের আর লম্বা লাইনে অপেক্ষা করতে হবে না।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনকারা আবেদন করতে পারবেন?
যেকোনো ভারতীয় নাগরিক যিনি সাধারণ পাসপোর্টের জন্য যোগ্য, তিনিই ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেন। প্রাথমিকভাবে, এই সুবিধা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র (PSKs) এবং পোস্ট অফিস পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রগুলিতে (POPSKs) পাওয়া যাচ্ছে।
তাই, আপনি যদি ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার কথা ভাবেন, তাহলে আবেদন করার আগে আপনার স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসে এই পরিষেবা চালু হয়েছে কিনা তা অবশ্যই জেনে নিন। সরকার এই প্রক্রিয়াটি দেশজুড়ে ধীরে ধীরে চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে, যাতে নতুন আবেদনকারী এবং পুরনো পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণকারী উভয়েই এই নতুন সুবিধার লাভ নিতে পারেন।
আবেদন প্রক্রিয়া কেমন?
ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া সাধারণ পাসপোর্টের মতোই। সমস্ত আবেদনকারীকে প্রথমে পাসপোর্ট সেবার অফিসিয়াল পোর্টালে নিবন্ধন করতে হবে এবং তারপর অনলাইন ফর্ম পূরণ করতে হবে। এরপর প্রয়োজনীয় ফি জমা দিয়ে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র বা পোস্ট অফিস পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে।
অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময়, আবেদনকারীর বায়োমেট্রিক তথ্য, যেমন আঙুলের ছাপ এবং ছবি, সংগ্রহ করা হবে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, চিপ সহ ই-পাসপোর্টটি প্রিন্ট করে আবেদনকারীর রেজিস্টার্ড ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
ই-পাসপোর্টের সুবিধাগুলি কী কী?
ই-পাসপোর্টের একাধিক সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- উন্নত নিরাপত্তা: ইলেকট্রনিক চিপের কারণে পরিচয় চুরি বা পাসপোর্ট নকল হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
- দ্রুত ইমিগ্রেশন: বিমানবন্দরে তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া দ্রুত হওয়ায় যাত্রীদের সময় বাঁচে।
- আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি: বিশ্বজুড়ে ভারতীয় পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
সামগ্রিকভাবে, এই ই-পাসপোর্ট উদ্যোগটি ভারতের জন্য একটি স্মার্ট এবং সুরক্ষিত ভ্রমণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, যা ভারতীয় নাগরিকদের জন্য বিশ্ব ভ্রমণকে আরও সহজ এবং ডিজিটালভাবে সক্ষম করে তুলবে।