High Court: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে হাইকোর্টের কড়া পর্যবেক্ষণ

High Court: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের (CBI) ভূমিকা নিয়ে তীব্র সন্দেহ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা এবং অগ্রগতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে, যা রাজ্যের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
হাইকোর্টের মূল পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্নাবলী
দীর্ঘদিন ধরে চলা এই দুর্নীতি মামলার তদন্তে সিবিআই এবং ইডি-র (ED) কার্যকলাপ নিয়ে আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শুনানিতে হাইকোর্ট বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছে, যা তদন্তকারী সংস্থার স্বচ্ছতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
- তদন্তের শেষ কোথায়?: আদালত সরাসরি প্রশ্ন তুলেছে যে, এই তদন্ত প্রক্রিয়া কবে শেষ হবে? বছরের পর বছর ধরে তদন্ত চলার পরেও কেন চূড়ান্ত চার্জশিট বা উপসংহারে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, তা নিয়ে হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
- দোষীদের চিহ্নিত করার পদ্ধতি: আবেদনকারীর আইনজীবীর কাছে বিচারপতি জানতে চান, এই ব্যাপক দুর্নীতির জাল থেকে মূল ষড়যন্ত্রকারী এবং সুবিধাভোগীদের কীভাবে চিহ্নিত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করা হবে? তদন্তকারী সংস্থার কাছে এর কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা আছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
- প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভূমিকা: আদালত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্যানেল প্রকাশের অস্বচ্ছ পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বিচারপতি চক্রবর্তী মন্তব্য করেন, যদি প্যানেল প্রকাশের কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম না থাকে, তবে পর্ষদ নিজের ইচ্ছামতো কাজ করতে পারে, যা দুর্নীতির পথকে আরও প্রশস্ত করে।
- চাকরি বাতিলের ভবিষ্যৎ: হাইকোর্ট উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, যদি ৩২,০০০ অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা হয়, তবে প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের অগ্রাধিকার কীভাবে নিশ্চিত করা হবে? এই জটিলতার সমাধান কীভাবে হবে, সেই বিষয়েও সিবিআইকে ভাবতে বলা হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের এই কড়া পর্যবেক্ষণ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একটি নতুন মোড় এনেছে। তদন্তকারী সংস্থার উপর আদালতের এই অনাস্থা আগামী দিনে এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।