Income Tax Fraud: সরকারি চাকরি করেও ট্যাক্স ফাঁকি? পুলিশ থেকে শিক্ষক, দেখুন কিভাবে AI ফাঁস করল বড় চক্রান্ত

Income Tax Fraud: সম্প্রতি ভারত সরকার এক বিশাল ট্যাক্স জালিয়াতির ঘটনা সামনে এনেছে, যেখানে পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী, সরকারি খাতের উদ্যোগ (PSUs), এবং স্কুলের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের হাজার হাজার বেতনভোগী কর্মচারী জড়িত। এই কর্মচারীরা অবৈধ উপায়ে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আয়কর বিভাগ তাদের ট্যাক্স রিটার্নে একাধিক প্রতারণামূলক অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে, যা ট্যাক্স ডিডাকশন বা ছাড়ের বিধানগুলির পরিকল্পিত অপব্যবহারের দিকে ইঙ্গিত করে।
কিভাবে এই জালিয়াতি ধরা পড়ল?
আয়কর বিভাগ এই অসঙ্গতিগুলি সনাক্ত করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ভিত্তিক অ্যানোমালি ডিটেকশন সিস্টেম, ডেটা ম্যাচিং এবং বিভিন্ন উৎসের তথ্যের ক্রস-রেফারেন্সিং। বিভাগটি নিয়োগকর্তা, ব্যাংক, পেমেন্ট গেটওয়ে, প্যান (PAN), আধার এবং ইমিগ্রেশন ডাটাবেস থেকে প্রাপ্ত তথ্য মিলিয়ে দেখেছে, যার ফলে এই বড় আকারের জালিয়াতি সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
জালিয়াতির প্রধান ধরণ
এই ট্যাক্স জালিয়াতি মূলত তিনটি প্রধান বিভাগে বিভক্ত ছিল:
- ভুল ডিডাকশন (ধারা 80C, 80D, 80E, 80G এর অধীনে): প্রায় ৯০,০০০ বেতনভোগী ব্যক্তি পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (PPF), ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট (NSC), ইকুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম (ELSS), এবং জীবন বীমা কর্পোরেশন (LIC)-এর মতো স্কিমগুলিতে বিনিয়োগের মিথ্যা দাবি করেছেন। এছাড়াও, স্বাস্থ্য বীমা প্রিমিয়াম, শিক্ষা ঋণের সুদ এবং দাতব্য অনুদানের মতো ব্যয়ের দাবিও করা হয়েছিল, যা আসলে করা হয়নি। এই দাবিগুলি মূলত মধ্যম থেকে উচ্চ আয়ের গোষ্ঠীর দ্বারা করা হয়েছিল এবং নিয়োগকর্তার ফর্ম ১৬-এর সাথে কর্মচারীর দাবি এবং ব্যাংকের রেকর্ড মিলিয়ে এগুলি সনাক্ত করা হয়েছে।
- জাল রাজনৈতিক অনুদানের দাবি: করদাতারা রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দেওয়ার মিথ্যা দাবি করে সরকারের ১,৩৫৩ কোটি টাকা প্রতারণা করার চেষ্টা করেছিলেন। হায়দ্রাবাদ এই ধরনের জালিয়াতির একটি কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে প্রায় ৪০০ জন আইটি পেশাদার মিথ্যা দাবি করেছেন। রাজনৈতিক অনুদানের পাবলিক ডিজিটাল রেকর্ড ক্রস-রেফারেন্স করে এটি সনাক্ত করা হয়েছে।
- জাল বিদেশী নাগরিক স্ট্যাটাস: রেল, পুলিশ এবং পিএসইউ-এর মতো খাতের কর্মচারীরা, বিশেষ করে নাগপুর জোনে, নিজেদেরকে ভারতে কর্মরত বিদেশী নাগরিক হিসেবে মিথ্যা দাবি করে প্রবাসীদের জন্য উদ্দিষ্ট কর ছাড়ের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এই জালিয়াতিতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বোগাস ছাড় জড়িত ছিল, যা ইমিগ্রেশন রেকর্ড, আধার-প্যান লিঙ্কেজ এবং কর্মসংস্থান তালিকা মিলিয়ে উদঘাটন করা হয়েছে।
জালিয়াতির পরিণাম
এই জালিয়াতির মোট পরিমাণ ৩,৪৬৮ কোটি টাকার বেশি। যারা ধরা পড়েছেন, তাদের জন্য কঠোর পরিণাম অপেক্ষা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ফাঁকি দেওয়া করের অবিলম্বে পুনরুদ্ধার, ভারী জরিমানা (ফাঁকি দেওয়া করের ২০০% পর্যন্ত) এবং আয়কর আইনের অধীনে ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। পুলিশ এবং শিক্ষকের মতো উচ্চ-বিশ্বাসের পেশায় থাকা ব্যক্তিদের খ্যাতিরও ক্ষতি হয়েছে।
আপনার কী করা উচিত?
যারা মিথ্যা দাবি করেছেন, তাদের স্বেচ্ছায় তাদের ট্যাক্স রিটার্ন সংশোধন করা উচিত যাতে জরিমানা কমানো যায়। এছাড়াও, সমস্ত দাবিকৃত ডিডাকশনের জন্য সঠিক ডকুমেন্টেশন এবং প্রমাণ বজায় রাখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সরকার তার সনাক্তকরণ ক্ষমতা ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে, তাই সৎ থাকা এবং আইন মেনে চলাই সর্বোত্তম পন্থা।