Download WB Holiday Calendar App 2026

Download Now!
দেশ

India-US Relations: মার্কিন শুল্কের পরেও রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনা বাড়ছে, লাভ না লোকসান ভারতের?

India-US Relations: সাম্প্রতিক সময়ে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং শুল্ক আরোপ সত্ত্বেও, ভারত কেবল রাশিয়ার তেল কেনা চালিয়েই যাচ্ছে না, বরং এর পরিমাণ আরও বাড়িয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পিছনে ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত রয়েছে, যা দেশের শক্তি সুরক্ষা এবং বৈদেশিক নীতিতে একটি নতুন দিক নির্দেশ করছে।

রাশিয়ার তেল আমদানিতে ভারতের রেকর্ড

আগস্ট মাসে, ভারত প্রতিদিন ২০ লক্ষ ব্যারেল রাশিয়ার তেল কিনে একটি নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে, যা জুলাই মাসের ১৬ লক্ষ ব্যারেল থেকে অনেকটাই বেশি। সেপ্টেম্বরে এই পরিমাণ আরও ১০-২০% বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে, ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় ৪০% এখন রাশিয়া থেকে আসছে। এই পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যায়, ভারতের জন্য রাশিয়ার তেল কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া এবং শুল্ক আরোপ

ভারতের এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৭শে আগস্ট থেকে বেশিরভাগ ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০% শুল্ক আরোপ করেছে। আমেরিকার যুক্তি হল, ভারত রাশিয়ার তেল কিনে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলোকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা ভারতকে চাপ দিয়ে রাশিয়ার তেলের উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে এবং রাশিয়ার আয় কমাতে চাইছে।

ভারতের অবস্থান এবং সুবিধা

ভারতের ওএনজিসি-র চেয়ারম্যান অরুণ কুমার সিং স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, যতক্ষণ রাশিয়ার তেল ভারতের জন্য সুবিধাজনক থাকবে, ততক্ষণ ভারত তা কিনবে। এর প্রধান কারণগুলো হলো:

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন
  • অর্থনৈতিক সুবিধা: রাশিয়ার তেল ব্যারেল প্রতি প্রায় ৮-১০ ডলার সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে, যা ভারতের জন্য একটি বড় আর্থিক সুবিধা। ২০২২ সাল থেকে এই ছাড়ের কারণে ভারত প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করেছে।
  • শক্তি সুরক্ষা: ভারত তার মোট চাহিদার ৮৫% অপরিশোধিত তেল আমদানি করে। রাশিয়ার সস্তা তেল ভারতের শক্তি সুরক্ষাকে মজবুত করছে এবং বিশ্বব্যাপী তেলের দামের অস্থিরতা থেকে সুরক্ষা দিচ্ছে।
  • বৈদেশিক নীতিতে স্বায়ত্তশাসন: এই সিদ্ধান্ত ভারতের স্বাধীন বৈদেশিক নীতির একটি প্রতিফলন, যা দেখায় যে ভারত তার জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।

ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব

ভারতের এই সিদ্ধান্তের কিছু সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে:

  • লাভ: সস্তা তেলের মাধ্যমে ভারত বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করছে, যা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।
  • ক্ষতি: মার্কিন শুল্কের কারণে বছরে প্রায় ৩৫-৪০ বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, বিশেষ করে টেক্সটাইল, পোশাক, গয়না এবং চামড়া শিল্পে।
  • সমাধান: এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ভারত চীন, রাশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো নতুন রপ্তানি বাজার খুঁজছে।
  • ভারত-মার্কিন সম্পর্ক: দুই দেশের সম্পর্ক বর্তমানে ১৯৯৮ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে, যা প্রতিরক্ষা এবং প্রযুক্তি অংশীদারিত্বকে প্রভাবিত করতে পারে।
  • ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক: অন্যদিকে, রাশিয়ার সাথে ভারতের সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে এবং দীর্ঘমেয়াদী তেল চুক্তিগুলো আরও স্থিতিশীল হচ্ছে।

সব মিলিয়ে, ভারত একটি ভারসাম্যমূলক নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করছে, যেখানে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং শক্তি সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে, ভারত তার জাতীয় স্বার্থে রাশিয়ার সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button