TET Wrong Question Case: বদলে যেতে পারে মেধাতালিকা! প্রশ্ন ভুল মামলার ভাগ্য নির্ধারণের পথে, ৪ঠা সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত শুনানি

TET Wrong Question Case: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টে চূড়ান্ত শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হল পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট ২০১৪ (TET 2014) পরীক্ষার ভুল প্রশ্ন মামলা। MAT 1594/2018 নম্বরযুক্ত এই মামলাটি আগামী ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে মাননীয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে শুনানি হতে চলেছে। এই মামলার রায়ের ওপর নির্ভর করছে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ, যারা বিশ্বাস করেন যে কয়েকটি ভুল প্রশ্নের জন্য তারা ন্যায্য নম্বর থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
মামলার প্রেক্ষাপট এবং মূল বিতর্ক
ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে। পরীক্ষার পর কিছু পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন যে প্রশ্নপত্রে ৬টি প্রশ্ন ভুল ছিল। এই অভিযোগ নিয়ে মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর, বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ একটি ঐতিহাসিক রায় দেয়, যেখানে সমস্ত পরীক্ষার্থীকে ওই ৬টি ভুল প্রশ্নের জন্য সম্পূর্ণ নম্বর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দিব্যেন্দু কুন্ডু নামে এক ব্যক্তি এবং পরবর্তীকালে স্বয়ং পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE) একাধিক মামলা দায়ের করে। পর্ষদের যুক্তি ছিল যে, যারা ওই প্রশ্নগুলির উত্তর দেয়নি বা ভুল উত্তর দিয়েছে, তাদের নম্বর দেওয়া উচিত নয়। এমনকি, এই ৬ নম্বর পেয়ে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাদের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলে পর্ষদ। এর ফলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে ওঠে এবং একাধিক অন্তর্বর্তীকালীন আবেদনের কারণে মূল মামলার শুনানি পিছিয়ে যেতে থাকে।
চূড়ান্ত শুনানির তাৎপর্য
আগামী ৪ঠা সেপ্টেম্বরের শুনানিটি এই মামলার ভাগ্য নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মাননীয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে এই মামলার শুনানি হবে। জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির নতুন উদ্যোগে পুরনো মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে, যার ফলেই এই দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত মামলাটি আবার গতি পেয়েছে।
এই শুনানির সম্ভাব্য ফলাফল কী হতে পারে, তা নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক জল্পনা চলছে।
- চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে রায় গেলে: যদি আদালত পুরনো রায় বহাল রেখে সমস্ত পরীক্ষার্থীকে ৬ নম্বর দেওয়ার নির্দেশ দেয়, তবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নতুন করে মেধাতালিকা তৈরি করতে হবে। এর ফলে, যে সমস্ত পরীক্ষার্থীরা অল্প নম্বরের জন্য উত্তীর্ণ হতে পারেননি, তারা টেট পাশ করার সুযোগ পাবেন। এই নতুন উত্তীর্ণ প্রার্থীরা ২০২২ বা ২০২৩ সালের টেট উত্তীর্ণদের সাথে ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেতে পারেন, যা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
- পর্ষদের পক্ষে রায় গেলে: অন্যদিকে, যদি আদালত পর্ষদের আবেদন মঞ্জুর করে, তবে ৬ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্তটি বাতিল হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে, যারা ইতিমধ্যেই এই নম্বর পেয়ে চাকরি করছেন, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
এই মামলার রায় যা-ই হোক না কেন, তা পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। সমস্ত চাকরিপ্রার্থী এবং শিক্ষামহল এখন ৪ঠা সেপ্টেম্বরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, একটি স্বচ্ছ এবং ন্যায্য সমাধানের আশায়।