Primary Recruitment Case: ২০২৫ প্রাথমিক নিয়োগে বড় মোড়! আজ হাইকোর্টে জরুরি শুনানি, বিপাকে পর্ষদ?
Primary Recruitment Case: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত ২০২৫ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে ফের আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর মুখেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা। অ্যাডভোকেট রাবিয়া খাতুন এবং আলী হোসেন আলমগীরের নেতৃত্বে মামলাটি জরুরি ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যার শুনানি আজ অর্থাৎ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
টেট ২০২২ উত্তীর্ণ এবং ডি.এল.এড পাঠরত হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভাগ্য এখন আদালতের রায়ের ওপর ঝুলে রয়েছে। মূলত ফলাফল প্রকাশে দেরি এবং আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়ে আসার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মামলার শুনানির সময়সূচী ও বিস্তারিত তথ্য
কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলাটির শুনানি হবে। মামলাকারীদের আইনজীবীরা ২৪শে নভেম্বর, আদালতের কাছে জরুরি ভিত্তিতে বা ‘Urgent Motion’-এ শুনানির আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে। নিচে শুনানির বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
| বিবরণ | তথ্য |
|---|---|
| বিচারপতি | জাস্টিস বিশ্বজিৎ বসু |
| শুনানির তারিখ | ২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ |
| মামলাকারী আইনজীবী | রাবিয়া খাতুন, আলী হোসেন আলমগীর এবং অন্যান্য |
| বিবাদী পক্ষ | WBBPE এবং NCTE |
মামলাকারীদের পরিচয় ও মূল অভিযোগ
এই রিট পিটিশনটি দায়ের করেছেন মূলত সেই সমস্ত চাকরিপ্রার্থীরা, যারা ২০২২ সালের টেট (TET 2022) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং ডি.এল.এড (D.El.Ed) কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের মূল সমস্যাগুলো হলো:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- কোর্সের সময়সীমা: নিয়ম অনুযায়ী, ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ প্রাইমারি এডুকেশনের অধীনস্থ কলেজগুলোতে তাদের ২ বছরের কোর্সটি ৩০শে জুন, ২০২৫-এর মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
- ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব: পরীক্ষার্থীরা ইতিমধ্যেই তাদের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন (Appeared candidates), কিন্তু পর্ষদ এখনও পর্যন্ত তাদের চূড়ান্ত ফলাফল বা মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট প্রদান করেনি।
- আবেদনের অন্তরায়: পর্ষদ ২০২৫-এর নিয়োগের জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তাতে আবেদনের শেষ তারিখ আগামী ৯ই ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করা হয়েছে। হাতে সার্টিফিকেট বা রেজাল্ট না থাকায়, এই প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারছেন না।
পিটিশনের আইনি ভিত্তি ও যুক্তি
আদালতে জমা দেওয়া পিটিশনে মামলাকারীরা বেশ কয়েকটি জোরালো আইনি যুক্তি তুলে ধরেছেন। তাদের দাবি, পর্ষদের গাফিলতির কারণেই তাদের এই দুরাবস্থা।
- মৌলিক অধিকার হরণ: মামলাকারীদের আইনজীবীদের মতে, ফলাফল প্রকাশে অযৌক্তিক দেরি পরীক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে, যা তাদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।
- অতীতের দৃষ্টান্ত (Precedent): এর আগে ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের ডি.এল.এড ব্যাচও একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। সেই সময় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তারা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসার সুযোগ পেয়েছিলেন। বর্তমান মামলাকারীরাও সেই একই যুক্তিতে আদালতের কাছে সুবিচার প্রার্থনা করেছেন।
- এনসিটিই-র ভূমিকা: মামলায় ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE)-কে একটি পার্টি করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেন কোর্স শেষ হলো না বা ফলাফল বের হলো না, সেই বিষয়ে তাদের জবাবদিহি চাওয়া হতে পারে।
আগামীকাল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলার রায় বা অন্তর্বর্তী নির্দেশের ওপর নির্ভর করছে বহু চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ। পর্ষদ যদি ফলাফল প্রকাশে তৎপর না হয়, তবে আদালত হয়তো পরীক্ষার্থীদের প্রফেশনাল বা প্রভিশনাল সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে।