প্রাথমিকে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ: ৩০০ পরীক্ষার্থীর হাইকোর্টে মামলা, থমকে যেতে পারে নিয়োগ প্রক্রিয়া! | Primary Teacher Recruitment

Primary Teacher Recruitment: পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে আবারও আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে প্রায় ৩০০ জন পরীক্ষার্থী মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলার ফলে ১৩,৪২১ জন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যে প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল, তা থমকে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর প্রশ্নচিহ্ন
গত ৮ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিচারপতি ওম নারায়ণ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জনস্বার্থ মামলার অনুমতি দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে ১৪ বা ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।
মামলাকারীদের মূল যুক্তি হলো, ২০১৭ এবং ২০২২ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল। তাদের দাবি, এই দুটি টেট মিলিয়ে প্রায় ২০টি প্রশ্ন ভুল ছিল এবং ভুল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরও তারা নম্বর পাননি। এর ফলে তারা উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তারা মনে করেন, এই প্রশ্ন ভুলের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত নয়।
আগের টেট পরীক্ষার প্রশ্ন ভুল এবং তার প্রভাব
অভিযোগ রয়েছে যে, ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষায় অন্তত ১৫টি প্রশ্ন ভুল ছিল, যা পরীক্ষার্থীদের ফলাফলের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। ২০২২ সালের টেট পরীক্ষাতেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। মামলাকারীদের দাবি, যদি প্রশ্ন ভুলের জন্য তাদের প্রাপ্য নম্বর থেকে বঞ্চিত করা হয়, তাহলে তাদের উত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত এবং নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রায় ১৩,৪২১টি শূন্যপদ পূরণের প্রস্তুতি চলছে, যা পুজোর পরপরই শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই নতুন মামলা সেই প্রক্রিয়াকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনঅন্যান্য প্রাসঙ্গিক মামলা
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এর আগেও বহুবার আইনি জটিলতায় জড়িয়েছে। সম্প্রতি, ৩২,০০০ শিক্ষক বাতিল মামলার আপডেট নিয়েও আলোচনা চলছে, যেখানে টেট দুর্নীতির প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও দীর্ঘ ১০ বছরের প্রতীক্ষার পর আদালতের নির্দেশে জট কেটেছে এবং ১২৪১ জন চাকরি পাচ্ছেন। এই ঘটনাগুলি রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগের স্বচ্ছতা এবং আইনি প্রক্রিয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে।
নতুন করে দায়ের করা এই মামলায় আদালত কী নির্দেশ দেয়, তার উপর বহু সংখ্যক চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। হাইকোর্টের এই রায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভবিষ্যৎ নিয়োগ নীতির উপরও গভীর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আদালত যদি প্রশ্ন ভুলের বিষয়টি আগে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয়, তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হতে পারে, যা একদিকে যেমন যোগ্য প্রার্থীদের জন্য হতাশার কারণ হতে পারে, তেমনই অন্যদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।