Primary Teacher Recruitment Scam: ‘নিয়মভঙ্গ মানেই দুর্নীতি নয়’ – প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সওয়াল রাজ্যের

Primary Teacher Recruitment Scam: পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। তবে, কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং রাজ্য সরকার ‘দুর্নীতি’ শব্দটি ব্যবহারের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাদের মতে, নিয়ম যথাযথভাবে পালন না করা হলেও, এটিকে সরাসরি ‘দুর্নীতি’ বলা যায় না যতক্ষণ না পর্যন্ত নির্দিষ্ট কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া বা বেআইনি আর্থিক লেনদেনের স্পষ্ট প্রমাণ মিলছে।
আদালতে রাজ্যের যুক্তি
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। তাঁর প্রধান যুক্তিগুলি ছিল নিম্নরূপ:
- ‘দুর্নীতি’ বনাম ‘নিয়মভঙ্গ’: অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু অনিয়ম বা নিয়ম লঙ্ঘন ঘটলেও, তাকে এককথায় ‘দুর্নীতি’ হিসেবে চিহ্নিত করা যুক্তিসঙ্গত নয়। তাঁর মতে, ‘দুর্নীতি’ প্রমাণ করতে হলে এটা দেখানো আবশ্যক যে, এই অনিয়মের মাধ্যমে কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে অন্যায়ভাবে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এর সঙ্গে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে।
- প্রমাণের দায়: অ্যাডভোকেট জেনারেল স্পষ্টভাবে জানান যে, দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণের সম্পূর্ণ দায় অভিযোগকারী পক্ষের। তিনি প্রশ্ন তোলেন, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া কীভাবে পরিচালিত হয়েছে বা কীভাবে নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযোগকারীদের কাছে কী সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে।
- তথ্যানুসন্ধান কমিটির পর্যবেক্ষণ: আদালতে তিনি আরও জানান যে, এই বিষয়ে গঠিত এবং আদালতের দ্বারা নিযুক্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটিও দুর্নীতির কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ খুঁজে পায়নি।
- ব্যক্তিগত মতামত গ্রাহ্য নয়: অ্যাডভোকেট জেনারেল জোর দিয়ে বলেন যে, কোনও ব্যক্তিগত ধারণা বা বিশ্বাস আদালতের কাছে প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।
পরবর্তী শুনানি ও তাৎপর্য
এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১২ই জুন ধার্য করা হয়েছে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ক্ষেত্রে এই মামলাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর রায় রাজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে। এখন সকলের দৃষ্টি আদালতের চূড়ান্ত রায়ের দিকে।