PSC Certificate Fraud: জাল ST সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরির আবেদন? PSC নিল কড়া পদক্ষেপ, জানুন বিস্তারিত

PSC Certificate Fraud: পাবলিক সার্ভিস কমিশন, পশ্চিমবঙ্গ (PSCWB) একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছে। ২০২৩ সালের মিসলেনিয়াস সার্ভিসেস রিক্রুটমেন্ট (বিজ্ঞপ্তি নম্বর: ১১/২০২৩) পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্বের জন্য যোগ্যতা অর্জনকারী তিনজন পরীক্ষার্থীর প্রার্থিপদ বাতিল করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তফসিলি উপজাতি (ST) বিভাগের জাল শংসাপত্র জমা দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কমিশনের এই কড়া পদক্ষেপে রাজ্য জুড়ে অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সতর্কতা তৈরি হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছে?
১৮ই আগস্ট, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তি (নম্বর: ১৪৭-পিএসসি/কন) অনুযায়ী, কমিশন প্রকাশ করে যে তিনজন পরীক্ষার্থী—শ্রী সন্তু পান (রোল নম্বর: ১১১২৭১১), শ্রী দেবব্রত পাল (রোল নম্বর: ১৫১৫২৭১), এবং শ্রী রাহুল মাহাতো (রোল নম্বর: ১৭১১৬৬৭)—যারা নিজেদের ST প্রার্থী হিসেবে দাবি করেছিলেন, তারা আসলে ওই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত নন। প্রাথমিক পরীক্ষায় পাশ করে চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পরেই বিষয়টি কমিশনের নজরে আসে।
কমিশনের তদন্ত এবং পদক্ষেপ
বিষয়টি জানার পর কমিশন অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে যা উঠে এসেছে তা সত্যিই চমকপ্রদ:
- শ্রী সন্তু পান এবং শ্রী দেবব্রত পাল: কমিশন ই-মেলের মাধ্যমে তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তারা কোনো উত্তর দেননি। এরপরেই তদন্ত গভীরে যায়। কমিশনের তদন্তে দেখা যায় যে, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের সরকারি পোর্টালে শ্রী সন্তু পানের দেওয়া সার্টিফিকেট নম্বরের কোনো অস্তিত্বই নেই। অন্যদিকে, শ্রী দেবব্রত পালের ক্ষেত্রে পোর্টালে তথ্য পাওয়া গেলেও দেখা যায় যে তার আসল শংসাপত্রটি OBC বিভাগের, ST নয়। কমিশন মনে করছে, শংসাপত্রটি জালিয়াতি বা বিকৃত করা হয়েছে।
- শ্রী রাহুল মাহাতো: অভিযুক্ত এই পরীক্ষার্থী অবশ্য নিজে থেকেই তার দোষ স্বীকার করে নেন। কমিশনের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি ই-মেলের মাধ্যমে জানান যে তিনি তার জাতি এবং যোগ্যতা সম্পর্কে ভুল তথ্য জমা দিয়েছিলেন।
এই সমস্ত প্রমাণ এবং স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে, কমিশন ওই তিনজন পরীক্ষার্থীর প্রার্থিপদ অবিলম্বে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের জন্য সতর্কতা
এই ঘটনাটি সমস্ত সরকারি চাকরির পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে যেকোনো তথ্য যাচাই করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। সরকারি পোর্টালে তথ্য যাচাই করার আধুনিক ব্যবস্থার কারণে এই ধরনের জালিয়াতি সহজেই ধরা পড়ে যায়। মিথ্যা বা জাল নথি জমা দেওয়ার ফল হতে পারে মারাত্মক:
- চিরতরে অযোগ্য ঘোষণা: শুধু সেই নির্দিষ্ট পরীক্ষার জন্যই নয়, ভবিষ্যতে যেকোনো সরকারি চাকরির পরীক্ষা থেকেও প্রার্থীকে চিরকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
- আইনি পদক্ষেপ: জালিয়াতির জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, যার ফলে জেল বা জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- কেরিয়ারের ক্ষতি: একবার এই ধরনের কার্যকলাপের সঙ্গে নাম জড়ালে তা ভবিষ্যতের কেরিয়ারে একটি কালো দাগ হয়ে থেকে যায়।
তাই আবেদন করার সময় নিজের সমস্ত তথ্য এবং নথি বারবার যাচাই করে নেওয়া উচিত। সৎ এবং স্বচ্ছ থাকাই সরকারি চাকরি পাওয়ার একমাত্র সঠিক পথ। কমিশনের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে তারা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।