চাকরি

SLST Case Update: এসএলএসটি নিয়োগ মামলায় অভিজ্ঞতার নম্বর নিয়ে জোর সওয়াল হাইকোর্টে, কী বললেন বিচারপতি?

SLST Case Update: পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ও মামলা সংক্রান্ত জটিলতা যেন কাটছেই না। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে এসএলএসটি (SLST) নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর নিয়োগের ক্ষেত্রে গ্রাহ্য হবে কি না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে আইনি বিতর্ক। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলার শুনানিতে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর সওয়াল-জবাব।

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে চলা এই মামলায় মূল বিরোধের জায়গাটি হল ‘টিচিং এক্সপেরিয়েন্স’ বা শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ নম্বর। স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয়েছে যখন দেখা যাচ্ছে, নবম-দশম স্তরে ইতিমধ্যেই কর্মরত শিক্ষকরা তাঁদের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একাদশ-দ্বাদশ স্তরের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বাড়তি সুবিধা দাবি করছেন। মামলাকারীদের অভিযোগ, এর ফলে নির্দিষ্ট কিছু প্রার্থী অন্যায্যভাবে ‘ডাবল বেনিফিট’ বা দ্বিগুণ সুবিধা ভোগ করছেন, যা সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বঞ্চনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

মামলাকারীদের মূল অভিযোগ ও যুক্তি

মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী আশিস বাবু আদালতে বেশ কিছু জোরালো যুক্তি পেশ করেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এসএসসির গেজেট নোটিফিকেশনে নবম-দশম (Clause A) এবং একাদশ-দ্বাদশ (Clause B) স্তরের নিয়োগের নিয়মাবলী সম্পূর্ণ আলাদা। তাই এক স্তরের অর্জিত অভিজ্ঞতা অন্য স্তরে ব্যবহার করা বা তার ভিত্তিতে নম্বর পাওয়া নিয়মবহির্ভূত। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মাঝপথে বা ‘Midway’ এসে খেলার নিয়ম বা রুলস পরিবর্তন করা যায় না।

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্নবাণ

শুনানি চলাকালীন বিচারপতি অমৃতা সিনহা কমিশনের ভূমিকা এবং মামলাকারীদের দাবি নিয়ে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন। বিচারপতির মন্তব্য নতুন করে ভাবাচ্ছে আইনি মহলকে। তিনি জানতে চান, যদি এসএসসির নিজস্ব বিধিতে বা রুলে এই অভিজ্ঞতা গ্রাহ্য করার ক্ষেত্রে কোনো স্পষ্ট বাধা বা নিষেধাজ্ঞা না থাকে, তবে কেন নবম-দশমের অভিজ্ঞতা একাদশ-দ্বাদশে গ্রাহ্য করা যাবে না? ফর্ম ফিলাপের সময় যেহেতু প্রার্থীরা তাঁদের অর্জিত অভিজ্ঞতার তথ্য জমা দিয়েছিলেন এবং কমিশন তা গ্রহণ করেছিল, তাই এখন সেই প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

মামলার বাদী ও বিবাদী পক্ষের যুক্তি এবং বিচারপতির পর্যবেক্ষণ নিচে একটি তালিকার মাধ্যমে তুলে ধরা হলো:

বিষয়মামলাকারীদের যুক্তিবিচারপতির পর্যবেক্ষণ
অভিজ্ঞতার গ্রহণযোগ্যতানবম-দশমের অভিজ্ঞতা একাদশ-দ্বাদশে গ্রাহ্য হওয়া উচিত নয়, কারণ দুটি স্তরের নিয়ম আলাদা।এসএসসির রুলে যদি বাধা না থাকে, তবে এক স্তরের অভিজ্ঞতা অন্য স্তরে গ্রাহ্য করতে সমস্যা কোথায়?
ডাবল বেনিফিটকর্মরতরা একবার সুবিধা পেয়ে চাকরি পেয়েছেন, পুনরায় একই অভিজ্ঞতায় নম্বর দাবি করা অন্যায্য।কোথায় লেখা আছে যে এই অভিজ্ঞতা বা নম্বর প্রদান করা যাবে না?
ফর্ম ফিলাপমাঝপথে নিয়ম বদলানো হচ্ছে, যা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধী।আবেদনের সময় প্রার্থীরা অভিজ্ঞতার তথ্য দিয়েছিলেন, তখন কেন প্রশ্ন ওঠেনি?

শুনানির ফলাফল ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

এদিনের দীর্ঘ শুনানির পর বিচারপতি অমৃতা সিনহা কোনো চূড়ান্ত রায় বা নির্দেশিকা জারি করেননি। যেহেতু এসএলএসটি নিয়োগ সংক্রান্ত আরও একাধিক মামলা এবং রুলস চ্যালেঞ্জের বিষয় বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে, তাই আদালত সম্ভবত তাড়াহুড়ো না করে সবগুলি দিক খতিয়ে দেখে তবেই একটি সামগ্রিক রায় প্রদান করবে। আপাতত নবম-দশমের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের একাদশ-দ্বাদশে বাড়তি ১০ নম্বর পাওয়ার বিষয়টি আদালতের চূড়ান্ত রায়ের ওপর ঝুলে রইল। হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী এখন তাকিয়ে আছেন আদালতের পরবর্তী নির্দেশিকার দিকে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button