চাকরি

SSC Scam: শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় সবচেয়ে বড় সাক্ষ্য! প্রাক্তন কর্তার বয়ানে ফাঁস হল চাঞ্চল্যকর তথ্য

SSC Scam: শিরোনামে আরও একবার রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। এবার আদালতে সাক্ষী হিসেবে যাঁর সাক্ষ্য ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে, তিনি হলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। তাঁর বিস্ফোরক বয়ানে উঠে এল একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা এই মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মূল ঘটনা

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার একসঙ্গে শুনানি চলছে। নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক এবং গ্রুপ-সি কর্মী নিয়োগের এই মামলাগুলিতে প্রথম সাক্ষী হিসেবে চিত্তরঞ্জন মণ্ডল আদালতে যা বলেন, তা এক কথায় রুদ্ধশ্বাস। নিজের সাক্ষ্যে তিনি সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা মুকুল রায়ের দিকে।

চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের বিস্ফোরক অভিযোগ

আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে চিত্তরঞ্জন মণ্ডল একাধিক বিস্ফোরক দাবি করেছেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক তাঁর অভিযোগের মূল বিষয়গুলি:

  • অবৈধ নিয়োগের জন্য চাপ: চিত্তরঞ্জনবাবু পরিষ্কার জানিয়েছেন যে, তাঁকে বেআইনিভাবে নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য প্রচণ্ড চাপ দেওয়া হচ্ছিল। এই চাপের পিছনে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মুকুল রায়ের হাত ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
  • বাড়িতে ডেকে চাপ: তাঁর অভিযোগ, পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে নিজের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়েও এই বিষয়ে চাপ দেন। অবৈধভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য তাঁর উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল।
  • মেয়াদ শেষের আগেই ইস্তফা: এই অতিরিক্ত চাপের কাছে নতিস্বীকার করতে না পেরে, চিত্তরঞ্জন মণ্ডল তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই SSC-র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন। আড়াই বছরের মাথায় তিনি এই দায়িত্ব ছেড়ে দেন, যা তাঁর কথার সত্যতা প্রমাণ করে।
  • রাজনৈতিক যোগাযোগ: ২০১১ সালের আগে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সেলের সভাপতি ছিলেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই SSC-র চেয়ারম্যান হয়েছিলেন বলে জানান। তবে, ২০১৯ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ইশতেহার কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন বলেও স্বীকার করেন। যদিও তাঁর সাক্ষ্য সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বলে তিনি দাবি করেছেন।

আদালতের উত্তপ্ত মুহূর্ত

চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের সাক্ষ্য চলাকালীন সিবিআই আইনজীবী এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শান্তিপ্রসাদ সিনহার আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, মাননীয় বিচারপতিকে হস্তক্ষেপ করে সবাইকে শান্ত করতে হয়। এই ঘটনা আদালতের ভিতরে এই মামলার গুরুত্ব এবং উত্তেজনাকে আরও একবার প্রমাণ করল।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

বিশেষজ্ঞের মত

এই বিষয়ে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন যে, দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তদের সাধারণ কৌশলই হল অভিযোগ অস্বীকার করা। তবে চিত্তরঞ্জন মণ্ডল যে ঝুঁকি নিয়েও সত্য কথা বলছেন, তা প্রশংসনীয়। তাঁর মতে, চিত্তরঞ্জনবাবু ২০২২ সালেও এক সাক্ষাৎকারে চাপের কথা বলেছিলেন, যা তাঁর বর্তমান সাক্ষ্যকে আরও মজবুত করছে।

চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের এই সাক্ষ্য যে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এক নতুন মাত্রা যোগ করল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আগামী দিনে এই মামলার জল কোন দিকে গড়ায়, সেদিকেই তাকিয়ে থাকবে গোটা রাজ্য।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button