চাকরি

Tet 2014 Case: সুপ্রিম কোর্টে টেট ২০১৪ প্রশ্নভুল মামলার শুনানিতে বড় আপডেট! মাথায় হাত চাকরিপ্রার্থীদের? জানুন বিস্তারিত

Tet 2014 Case: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং টেট ২০১৪-র প্রশ্নভুল মামলা বা ম্যাট ১৫৯৪ (MAT 1594) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আজ এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শুনানি অনুষ্ঠিত হলো। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের ৬ নম্বর কোর্টে ৩৮ নম্বর সিরিয়ালে এই মামলাটি ওঠে। আজকের শুনানিতে আদালতের নির্দেশ এবং তার ফলাফল হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। একদিকে সফল প্রার্থীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন, অন্যদিকে মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

আজকের শুনানির বিস্তারিত বিবরণ, আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব এবং আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচে আলোচনা করা হলো।

মামলার প্রেক্ষাপট ও মূল বিষয়বস্তু

টেট ২০১৪-র প্রশ্নভুল মামলাটি মূলত দীপতেন্দু কুন্ডু বনাম পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ-এর মধ্যে। এই মামলার গতিপ্রকৃতি বেশ জটিল, যেখানে একাধিক পক্ষ জড়িয়ে রয়েছে:

  • মূল মামলাকারী: দীপতেন্দু কুন্ডু, যিনি প্রাথমিকভাবে সকল পরীক্ষার্থীকে ৬ নম্বর দেওয়ার বিপক্ষে মামলা করেছিলেন।
  • রেসপন্ডেন্ট বা প্রতিবাদী: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE) এবং প্রতিভা মন্ডল (যিনি একজন সফল এবং চাকরিরত প্রার্থী)।
  • পর্ষদের অবস্থান: পর্ষদ এই মামলায় কখনও পিটিশনার আবার কখনও রেসপন্ডেন্ট হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো সবাইকে ঢালাও নম্বর না দেওয়া এবং প্রতিভা মন্ডলকে সঙ্গে নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া।

আজকের শুনানির হাইলাইটস

আজকের শুনানির শুরুতেই দীপতেন্দু কুন্ডুর আইনজীবীরা আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন জানান। তাঁদের বক্তব্য ছিল, তাঁদের সিনিয়র আইনজীবী অন্য একটি কোর্টে ব্যস্ত থাকায় আজ সওয়াল করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তাঁরা এক সপ্তাহ পরে শুনানির দিন ধার্য করার অনুরোধ জানান।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

এই সময়সীমা নিয়ে আদালতে বাদানুবাদ শুরু হয়:

  • বিচারপতির প্রশ্ন: বিচারপতি জানতে চান এই মামলার মূল বিবেচ্য বিষয় কী—সকলকে নম্বর দেওয়া হবে নাকি শুধুমাত্র পিটিশনারদের?
  • পর্ষদের বিরোধিতা: দীপতেন্দু কুন্ডুর পক্ষ থেকে পরবর্তী সপ্তাহে তারিখ চাওয়া হলে পর্ষদ তার তীব্র বিরোধিতা করে। পর্ষদের আইনজীবী যুক্তি দেন যে, পরের সপ্তাহটি ‘মিসলেনিয়াস’ সপ্তাহ, তাই তখন শুনানি সম্ভব নয়। পর্ষদ দাবি জানায়, ডিসেম্বরের শীতকালীন ছুটির পর অর্থাৎ জানুয়ারিতে আদালত খোলার পর যেন মামলার তারিখ দেওয়া হয়।
  • সফল প্রার্থীদের মত: প্রতিভা মন্ডল বা চাকরিরত প্রার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যেহেতু তাঁরা চাকরিতে বহাল আছেন, তাই শুনানি দেরিতে হলে তাঁদের কোনও সমস্যা নেই।

নিয়োগের সময়সীমা ও বড় ধাক্কা

শুনানির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড় আসে যখন সিনিয়র অ্যাডভোকেট আনন্দ স্যার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি জানান, বর্তমানে প্রাথমিকে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে (২০২২-এর নোটিফিকেশন অনুযায়ী), তার সময়সীমা আগামী ৯ই ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাচ্ছে।

  • আইনজীবীর যুক্তি: যদি ৯ই ডিসেম্বরের আগে এই মামলার ফয়সালা না হয় এবং মামলাকারীরা যদি নম্বর পেয়ে পাসও করেন, তবুও তাঁরা বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
  • আদালতের সিদ্ধান্ত: আইনজীবীরা ৯ই ডিসেম্বরের আগে একটি ফাঁকা স্লট বা তারিখের জন্য বারবার অনুরোধ করলেও, বিচারপতি সময়ের অভাবে তা দিতে পারেননি। বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ডিসেম্বরের ছুটির পরেই অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

শুনানির ফলাফল ও প্রভাব

আজকের এই নির্দেশের ফলে বিভিন্ন পক্ষের ওপর ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব পড়েছে:

  1. মামলাকারীদের জন্য দুঃসংবাদ: যাঁরা আশা করেছিলেন যে প্রশ্নভুল মামলার রায়ে নম্বর বেড়ে তাঁরা পাস করবেন এবং ৯ই ডিসেম্বরের আগে চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন, তাঁদের জন্য এটি বড় ধাক্কা। ৯ই ডিসেম্বরের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁদের বর্তমান নিয়োগে অংশগ্রহণের সুযোগ কার্যত শেষ হয়ে গেল।
  2. পর্ষদ ও সফল প্রার্থীদের স্বস্তি: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং বর্তমানে চাকরিরত প্রার্থীদের জন্য এটি স্বস্তির খবর। মামলা পিছিয়ে যাওয়ায় চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আইনি বাধা আপাতত থাকল না।

উপসংহার: টেট ২০১৪ প্রশ্নভুল মামলাটি এখন জানুয়ারি মাস পর্যন্ত পিছিয়ে গেল। সঠিক তারিখ আদালত পরে জানাবে, তবে বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আশায় থাকা প্রার্থীদের স্বপ্ন আজ বড় বাধার সম্মুখীন হলো।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button