TET 2023 case: TET 2023 প্রশ্নভুল মামলা: হাইকোর্টে দায়ের হল নতুন কেস, শুনানির দিন ঘোষণা! চাকরিপ্রার্থীদের ভাগ্য কি বদলাবে?
 
 TET 2023 case: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (WBBPE) দ্বারা পরিচালিত ২০২৩ সালের টেট (TET) পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। এবার পরীক্ষার একাধিক প্রশ্ন ও চূড়ান্ত উত্তরপত্রে (Final Answer Key) ভুলের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই মামলাটি পূর্ববর্তী ২০১৪, ২০১৭ বা ২০২২ সালের মামলার থেকে বেশ কিছু নতুন এবং ইউনিক গ্রাউন্ডে দায়ের করা হয়েছে, যা চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে নতুন করে আশা জাগিয়েছে।
এই নতুন মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা হয়েছে, যার ফাইলিং এবং রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ২৭শে অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে সম্পন্ন হয়েছে। মামলাটির প্রথম শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৬ই নভেম্বর, ২০২৫। মাননীয় বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি হবে।
মামলার প্রধান গ্রাউন্ড ও অভিযোগসমূহ
আবেদনকারীরা একাধিক সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাদের প্রধান অভিযোগগুলি হলো:
- চূড়ান্ত উত্তরপত্রে পরিবর্তন: অভিযোগ করা হয়েছে যে, প্রভিশনাল উত্তরপত্রের তুলনায় চূড়ান্ত উত্তরপত্রে একাধিক প্রশ্নের উত্তর পরিবর্তন করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ‘C’ সিরিজের প্রশ্নপুস্তিকায় ১৭, ৬৪, এবং ১৪২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর বদল করা হয়। এর ফলে বহু যোগ্য পরীক্ষার্থী অযোগ্য (Disqualified) হয়ে গিয়েছেন।
- ত্রুটিপূর্ণ উত্তরপত্র: আবেদনকারীদের দাবি, চূড়ান্ত উত্তরপত্রেই একাধিক ভুল রয়েছে। কিছু প্রশ্নের একাধিক সঠিক উত্তর থাকা সত্ত্বেও পর্ষদ একটি নির্দিষ্ট উত্তরকে বেছে নিয়েছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে ভুল উত্তরকেই সঠিক বলে মানা হয়েছে।
- অভিযোগ নিরসনে উদাসীনতা: পরীক্ষার্থীরা পর্ষদের কাছে এই ভুলগুলি নিয়ে অভিযোগ (Grievance) জানালেও, চূড়ান্ত উত্তরপত্রে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি এবং ভুল সংশোধন করা হয়নি।
- বৈষম্যের অভিযোগ: একটি অন্যতম বড় অভিযোগ হলো বৈষম্য। ২০২২ সালের টেট পরীক্ষায় প্রশ্ন ভুলের জন্য যেখানে সকল অংশগ্রহণকারীকে গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ২০২৩ সালের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি।
- বিশেষজ্ঞ মতামত: মামলাকারীরা বিভিন্ন রেফারেন্স বই এবং পাঠ্যপুস্তক বিশেষজ্ঞদের দ্বারা যাচাই করিয়েছেন। বাংলা ব্যাকরণের ক্ষেত্রে বামনদেবের বইয়ের মতো প্রামাণ্য বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে দেখানো হয়েছে যে পর্ষদের দেওয়া একাধিক উত্তর ভুল।
- পেডাগজিক্যাল প্রশ্ন: শিক্ষাবিজ্ঞান (Pedagogy) সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের একাধিক উত্তর সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা পর্ষদ বিবেচনা করেনি বলে অভিযোগ।
পরিসংখ্যান ও বিতর্কিত প্রশ্ন
এবারের টেট পরীক্ষায় ৩ লক্ষ ৯৫৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৬,৭৫৪ জন, অর্থাৎ প্রায় ২.৪৭% পাস করেছেন। আবেদনকারীদের দাবি, উত্তরপত্রে এই ধরনের ভুলের কারণেই পাশের হার এত কম। ‘C’ সিরিজের প্রশ্নপুস্তিকা অনুযায়ী, প্রায় ১৬টি প্রশ্ন নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। বিতর্কিত প্রশ্নগুলির মধ্যে কয়েকটি হলো – ৫, ১৫, ১৬, ২৫, ২৬, ৪২, ৪৯, ৫৯, ৬৪, ৯১, ৯৩, ১৩২, ১৪২ এবং ১৪৬।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনচাকরিপ্রার্থীদের আশা, আদালতের হস্তক্ষেপে তারা সঠিক বিচার পাবেন এবং পর্ষদ তাদের অভিযোগগুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে। ৬ই নভেম্বরের শুনানির দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছেন হাজার হাজার পরীক্ষার্থী।
 
  
 