TET for In-Service Teachers: শিক্ষকদের TET পাশ বাধ্যতামূলক! সুপ্রিম কোর্টের রায়ের রিভিউ পিটিশন

TET for In-Service Teachers: সাম্প্রতিক একটি ঐতিহাসিক রায়ে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সমস্ত কর্মরত শিক্ষকদের জন্য টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (TET) পাস করা বাধ্যতামূলক করেছে। এই রায়টি সারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা করেছে, বিশেষ করে কেরালায়, যেখানে প্রায় ৫,০০০০ শিক্ষক এই নতুন নিয়মের আওতায় পড়েছেন। কেরালা সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সারা দেশে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
মূল ঘটনা
সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীর সমস্ত শিক্ষককে তাদের চাকরি বজায় রাখতে এবং পদোন্নতির জন্য TET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এই নিয়মটি শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯ এবং ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE) এর ২০১০ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো সারা দেশে শিক্ষকদের যোগ্যতার একটি নুন্যতম মান নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করা।
কেরালা সরকারের অবস্থান
কেরালার শিক্ষামন্ত্রী, ভি. শিবানকুট্টি, জানিয়েছেন যে রাজ্য সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাবে। তাদের মতে, পূর্ববর্তী প্রভাব থেকে এই নিয়ম কার্যকর করা (retrospectively) শিক্ষকদের প্রতি অবিচার। শিক্ষা যেহেতু ভারতের সংবিধানের যুগ্ম তালিকার অন্তর্গত, তাই রাজ্য সরকার এই বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে চায়।
শিক্ষকদের উপর প্রভাব
এই রায়ের ফলে শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী:
- যেসব শিক্ষকের অবসরের পাঁচ বছরের কম সময় বাকি আছে, তারা TET পাস না করেও চাকরি চালিয়ে যেতে পারবেন, কিন্তু কোনো পদোন্নতি পাবেন না।
- যাদের চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি বাকি, তাদের আগামী দুই বছরের মধ্যে TET পাস করতে হবে, অন্যথায় তাদের বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণ করতে হবে।
এই নিয়মটি সরকারি এবং বেসরকারি উভয় স্কুলের লক্ষ লক্ষ শিক্ষককে প্রভাবিত করবে, যা তাদের কর্মজীবনে একটি বড় অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
শিক্ষাবিদরা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন, কারণ এটি শিক্ষার মান উন্নত করতে সাহায্য করবে। তবে, অনেকেই মনে করছেন যে কর্মরত এবং অভিজ্ঞ শিক্ষকদের উপর হঠাৎ করে এই নিয়ম চাপিয়ে দেওয়াটা যুক্তিসঙ্গত নয়। তাদের মতে, সরকারের উচিত ছিল একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে এই নিয়মটি ধাপে ধাপে কার্যকর করা।
ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
কেরালা সরকারের রিভিউ পিটিশনের ফলাফলের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। যদি সুপ্রিম কোর্ট তাদের আবেদন গ্রহণ করে, তাহলে হয়তো এই নিয়মে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। তবে, যদি রায় বহাল থাকে, তাহলে সারা দেশের রাজ্য সরকারগুলিকে এটি কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। শিক্ষকদেরও নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে এই নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য। এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসছে এবং শিক্ষকদের ক্রমাগত নিজেদের আপডেট রাখাটা কতটা জরুরি।