TET Mandatory: শিক্ষকদের জন্য টেট বাধ্যতামূলক, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য?

TET Mandatory: সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা জগতে এক নতুন আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এক যুগান্তকারী নির্দেশে কর্মরত শিক্ষকদের জন্যও টেট (Teacher Eligibility Test) পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই নির্দেশের ফলে রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজ্য সরকার এবং শিক্ষক সংগঠনগুলি এই বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিতে চলেছে, তা নিয়েই আমাদের আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশটি ঠিক কী?
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, যে সমস্ত কর্মরত শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ এখনো পাঁচ বছরের বেশি বাকি আছে, তাঁদের আগামী দুই বছরের মধ্যে টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। যদি কোনো শিক্ষক এই সময়ের মধ্যে টেট পাশ করতে না পারেন, তবে তাঁকে বাধ্যতামূলকভাবে অবসর গ্রহণ করতে হতে পারে। তবে, যে সমস্ত শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছরের কম, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। এই নির্দেশের মূল উদ্দেশ্য হলো সারা দেশে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করা এবং শিক্ষকদের যোগ্যতার একটি নুন্যতম মাপকাঠি নিশ্চিত করা।
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর পশ্চিমবঙ্গের প্রায় দেড় লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক প্রভাবিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেক শিক্ষক, যাঁরা বছরের পর বছর ধরে নিষ্ঠার সাথে শিক্ষকতা করে আসছেন, তাঁরা এই নতুন নিয়মের ফলে নিজেদের চাকরি নিয়ে চিন্তিত। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনগুলি একজোট হয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছে।
- রিভিউ পিটিশনের পথে শিক্ষক সংগঠন: ইতিমধ্যেই, অল বেঙ্গল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (ABPTA) এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে। তাদের মতে, যে শিক্ষকরা ইতিমধ্যেই বছরের পর বছর ধরে শিক্ষকতা করে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, তাঁদের আবার নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার কোনো মানে হয় না।
- রাজ্য সরকারের ভূমিকা: স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে নবান্নে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, যেখানে এই বিষয়ে একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করার কথা বলা হয়েছে। যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি, তবে শিক্ষক মহলের চাপ এবং পরিস্থিতি বিচার করে সরকারও এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ কী?
এই মুহূর্তে রাজ্যের শিক্ষকরা এক অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। একদিকে চাকরির চিন্তা, অন্যদিকে নতুন করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার চাপ। শিক্ষক সংগঠনগুলির মতে, টেট পরীক্ষার পরিবর্তে শিক্ষকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালা বা রিফ্রেশার কোর্সের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে যেমন শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, তেমনই তাঁদের আত্মসম্মানও বজায় থাকবে।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনএখন এটাই দেখার যে, সুপ্রিম কোর্ট রিভিউ পিটিশনটি গ্রহণ করে কিনা এবং রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, একটা বিষয় পরিষ্কার যে, আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা জগতে এক বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। আমরা এই বিষয়ের উপর কড়া নজর রাখব এবং সর্বশেষ তথ্য আপনাদের কাছে পৌঁছে দেব।