Voter List Correction: ভোটার তালিকায় নামের বানান ভুল? শুনানির টেনশন শেষ! কমিশনের নতুন নিয়মে বিরাট স্বস্তি রাজ্যবাসীর
Voter List Correction: পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ ভোটারদের জন্য নির্বাচন কমিশন একটি অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক খবর নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে যাদের পরিবারের সদস্য বা পূর্বপুরুষদের (যেমন বাবা-মা কিংবা দাদু-ঠাকুমা) নামের বানানে ভোটার তালিকায় ত্রুটি রয়েছে, তাদের জন্য এই নতুন নির্দেশিকা বড়সড় স্বস্তি দেবে। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ভীতি কাজ করত যে, নামের বানানে সামান্যতম ভুল থাকলেই হয়তো নির্বাচন কমিশনের অফিসে শুনানির জন্য দৌড়াতে হবে বা আইনি জটিলতায় পড়তে হবে। তবে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রাক্কালে কমিশন সেই নিয়ম অনেকটাই শিথিল করেছে।
বিএলও অ্যাপে নতুন আপডেটে স্বস্তি
সম্প্রতি বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও (BLO)-দের ব্যবহৃত অ্যাপে একটি নতুন ফিচার বা অপশন যুক্ত হয়েছে, যার নাম ‘Reverify Logical Discrepancies’। এই প্রক্রিয়ায় দেখা যাচ্ছে, বহু নাগরিকের তথ্য ২০০২ সালের পুরনো ডেটার সঙ্গে বর্তমান ২০২৫ সালের তথ্যের মিলছে না। বিশেষ করে বাবার নাম বা পদবির ক্ষেত্রে এই গরমিল বেশি নজরে আসছে। তবে কমিশনের নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, এই ধরনের ছোটখাটো ভুলের জন্য আর সাধারণ মানুষকে শুনানির নোটিশ পাঠানো হবে না।
ভুলের ধরণ ও তার সমাধান কীভাবে হবে তা নিচে একটি তালিকার মাধ্যমে বোঝানো হলো:
| ভুলের ধরণ | উদাহরণ (পুরনো বনাম নতুন) | কমিশনের সিদ্ধান্ত |
|---|---|---|
| সামান্য বানান ভুল | ‘কাশিনাথ’ বনাম ‘কাশি’ | বিএলও লেভেলেই সমাধান হবে। |
| পদবি বা মাঝের নাম | ‘অসীম কুমার দত্ত’ বনাম ‘অসীম দত্ত’ | শুনানির প্রয়োজন নেই। |
| নামের পরিবর্তন (বড়) | ‘বাসু’ বনাম ‘বাসুদেব’ | ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গ্রাহ্য হবে। |
| সম্পূর্ণ আলাদা নাম | ‘কমল’ বনাম ‘শ্যামল’ | শুনানির নোটিশ আসতে পারে। |
বিএলও-দের বিশেষ ক্ষমতা ও করণীয়
কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, যদি নামের বানান বা টাইটেলের ক্ষেত্রে ছোটখাটো অসঙ্গতি থাকে, তবে বিএলও নিজেই তা যাচাই করে ঠিক করে দেবেন। এর জন্য তাকে একটি ‘আন্ডারটেকিং’ (Undertaking) বা ঘোষণাপত্র সই করে অ্যাপে আপলোড করতে হবে। এই ঘোষণাপত্রের মূল কথা হলো, বানানে পার্থক্য থাকলেও আদতে দুটি নাম একই ব্যক্তির। বিএলও এই মর্মে নিশ্চিত করলেই ওই ভোটারের বাড়িতে আর কোনো শুনানির চিঠি যাবে না।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনবিএলও-দের কাছে বর্তমানে দুই ধরণের কেস বা ফর্ম আসছে:
- Progeny Cases: যেখানে পূর্বপুরুষের নামে ভুল রয়েছে।
- Self Cases: যেখানে ভোটারের নিজের নামে ভুল রয়েছে।
সাধারণ ভোটারদের কী করতে হবে?
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার দায়িত্ব বিএলও-র ওপর ন্যস্ত। সাধারণ ভোটারকে নিজে থেকে কোনো ফর্ম পূরণ করতে হবে না। তবে বিএলও যখন বাড়িতে ভেরিফিকেশনের জন্য আসবেন, তখন ভোটারদের কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে:
- সঠিক নথিপত্র প্রদর্শন: নামের বানান যে সঠিক, তার প্রমাণ হিসেবে আধার কার্ড বা অন্য কোনো সরকারি পরিচয়পত্র প্রস্তুত রাখতে হবে।
- সহযোগিতা: বিএলও যদি কোনো সাপোর্টিং ডকুমেন্টস বা নথির ছবি (উভয় পিঠ) চান, তবে তা দ্রুত সরবরাহ করতে হবে।
তবে মনে রাখবেন, যদি নাম সম্পূর্ণ বদলে যায় (যেমন উদাহরণে বলা হয়েছে ‘কমল’ থেকে ‘শ্যামল’), সেক্ষেত্রে বিএলও ভেরিফাই করবেন না এবং তখন শুনানির প্রয়োজন হতে পারে। কমিশনের এই পদক্ষেপে রাজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ, যাদের ভোটার কার্ডে ছোটখাটো ভুল আছে, তারা হয়রানি থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।