WBSSC: সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়েও টালবাহানা! কেন পুরনো চাকরিতে ফিরতে পারছেন না শিক্ষকরা? জানুন বিস্তারিত

WBSSC: রাজ্যজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ২৬,০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ বাতিলের ঘটনায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশিকা কার্যকর না করায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় আবারও একবার রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে।
কী ছিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ?
গত ৩ এপ্রিল, ২০২৫-এ সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের ২৬,০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিল করে এক ঐতিহাসিক রায় দেয়। তবে, সেই রায়ের ৪৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছিল। আবেদনকারীদের অভিযোগ, SSC এই নির্দেশিকাগুলো সময়মতো পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
নির্দেশিকাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল:
- পূর্বের চাকরিতে ফেরা: ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত যে সমস্ত প্রার্থীদের “tainted” বা দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি এবং যারা তাদের পূর্বের স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা বিভাগের চাকরি ছেড়ে SSC-তে যোগ দিয়েছিলেন, তাদের পুরনো চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
- চাকরির ধারাবাহিকতা: পুরনো চাকরিতে ফেরার পর তাদের চাকরির ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। অর্থাৎ, তাদের সিনিয়রিটি, বেতন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সমস্ত সুযোগ-সুবিধা অক্ষুণ্ন থাকবে।
- সুপারনিউমেরারি পদ সৃষ্টি: যদি তাদের পুরনো বিভাগে কোনো শূন্যপদ না থাকে, সেক্ষেত্রে “সুপারনিউমেরারি পদ” বা অতিরিক্ত পদ তৈরি করে তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশিকাগুলো কার্যকর করার জন্য SSC এবং রাজ্য সরকারকে তিন মাসের সময় দিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনও বহু যোগ্য প্রার্থী তাদের পুরনো চাকরিতে ফিরতে পারেননি।
ভুক্তভোগীদের হয়রানি এবং মামলার প্রেক্ষাপট
জানা গেছে, SSC পূর্বের চাকরি থেকে আসা প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরি করলেও, তাদের পুরনো পদে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। অনেক প্রার্থী, বিশেষ করে দৃষ্টিহীন শিক্ষকরা, এখনও পর্যন্ত তাদের আগের কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেননি, যার ফলে তারা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
এই অসহায়তার কারণেই সোমনাথ নিয়োগী নামে এক ব্যক্তি ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ অরুণ কুমার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলাটি দায়ের করেন (ডায়েরি নম্বর ৫০৫৮৬/২০২৫)। আবেদনকারীদের মূল দাবি হলো, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ যেন অবিলম্বে এবং সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করা হয়। এই মামলা রাজ্যের শিক্ষা এবং প্রশাসনিক মহলে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এখন দেখার বিষয়, সর্বোচ্চ আদালত এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয় এবং ভুক্তভোগী চাকরিপ্রার্থীরা কবে রায় পান।