WBSSC SLST Exam Update: শিক্ষক ও নতুন চাকরিপ্রার্থীদের জন্য পৃথক SLST পরীক্ষা? সুপ্রিম কোর্টে নতুন মামলা

WBSSC SLST Exam Update: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) কর্তৃক আয়োজিত SLST (State Level Selection Test) পরীক্ষা নিয়ে একটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা এখন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত, অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের দরজায় পৌঁছেছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ২০১৬ সালে নিযুক্ত শিক্ষক এবং নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। উভয়ের দাবি পৃথক পরীক্ষার, কিন্তু কারণ ভিন্ন। এই প্রতিবেদনে আমরা এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরব।
বিতর্কের মূল কারণ
এই বিতর্কের মূলে রয়েছে SLST পরীক্ষার কাঠামো এবং প্রতিযোগিতা। একদিকে, ২০১৬ সালে নিযুক্ত শিক্ষকরা পুনরায় পরীক্ষায় বসতে চান না; তারা নিজেদের জন্য একটি পৃথক পুনঃ প্যানেল (re-paneling) প্রক্রিয়ার দাবি করছেন। তাদের যুক্তি হলো, তারা ইতিমধ্যে একবার যোগ্যতা প্রমাণ করে চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছেন।
অন্যদিকে, নতুন চাকরিপ্রার্থীরাও একটি পৃথক পরীক্ষার দাবি জানাচ্ছেন। তাদের প্রধান উদ্বেগ হলো, শিক্ষকদের জন্য অতিরিক্ত ১০ নম্বর বরাদ্দ রয়েছে, যা তাদের জন্য প্রতিযোগিতাকে অত্যন্ত কঠিন করে তুলেছে। নতুনদের মতে, এই অতিরিক্ত নম্বর তাদের মেধার ভিত্তিতে চাকরি পাওয়ার পথে একটি বড় বাধা সৃষ্টি করছে। এই পরিস্থিতিতে, উভয় পক্ষই নিজেদের স্বার্থে পৃথক পরীক্ষার দাবিতে একজোট হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলা
শিক্ষক এবং নতুন চাকরিপ্রার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টের ১৬ই জুলাই, ২০২৫-এর একটি আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা হয়েছে, যেখানে একটি সংযুক্ত SLST পরীক্ষার কথা বলা হয়েছিল।
মামলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- ডায়েরি নম্বর: 41453/2025
- মামলার পক্ষ: অভিজিৎ সাধুখাঁ বনাম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।
- আবেদনকারী: এই মামলায় মোট ৭৩ জন আবেদনকারী রয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিক্ষক।
- প্রতিবাদী: প্রতিবাদীদের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার, পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং এর চেয়ারম্যান, এবং পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং এর সভাপতি।
মামলাটি ২৮শে জুলাই, ২০২৫-এ দায়ের করা হয়েছিল এবং ২২শে আগস্ট, ২০২৫-এ যাচাই করা হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন এবং ২৫শে আগস্ট, ২০২৫-এ মাননীয় বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং অরবিন্দ কুমারের বেঞ্চে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ ও সম্ভাবনা
এখন সকলের নজর সুপ্রিম কোর্টের দিকে। আদালত এই বিষয়ে কী পর্যবেক্ষণ দেয় এবং কী নির্দেশ দেয়, তার ওপরই নির্ভর করছে পরীক্ষার ভবিষ্যৎ। দুটি প্রধান সম্ভাবনা রয়েছে:
- পরীক্ষা স্থগিত: আদালত যদি মনে করে যে মামলাটির পুঙ্খানুপুঙ্খ শুনানি প্রয়োজন, তাহলে ৭ই এবং ১৪ই সেপ্টেম্বরের নির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত করার নির্দেশ দিতে পারে।
- পৃথক পরীক্ষার নির্দেশ: আদালত উভয় পক্ষের যুক্তি শুনে শিক্ষক এবং নতুন চাকরিপ্রার্থীদের জন্য পৃথক পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারে।
তবে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, মামলাটি এমন এক সময়ে দায়ের করা হয়েছে যখন পরীক্ষার সময়সূচি ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে এবং অ্যাডমিট কার্ডও বিতরণ করা হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে, এত অল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষার কাঠামোয় কোনো বড় পরিবর্তন আনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
এখন দেখার বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট এই জটিল পরিস্থিতিতে কী সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ। আমরা এই বিষয়ের ওপর নজর রাখব এবং সর্বশেষ তথ্য আপনাদের কাছে পৌঁছে দেব।