WBSSC Teacher: আজ ২১শে জুলাই বাংলার বঞ্চিত যোগ্য শিক্ষকদের দিল্লী অভিযান – লড়াই এবার রাজধানীর রাজপথে

WBSSC Teacher: ২১শে জুলাই, যখন কলকাতা শহর শাসক দলের সমাবেশে মুখরিত থাকবে, ঠিক সেই সময়েই একদল বঞ্চিত শিক্ষক নীরবে তাঁদের অধিকার আদায়ের লড়াইকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। ২০১৬ সালের SLST (State Level Selection Test) পরীক্ষার মাধ্যমে নিযুক্ত ও চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্যে থেকে কয়েক হাজার যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা তাঁদের ন্যায্য বিচারের দাবীতে রাজধানী দিল্লির পথে পাড়ি দিচ্ছেন। হাওড়া, মালদা এবং শিয়ালদহ স্টেশন থেকে শুরু হবে তাঁদের এই যাত্রা, যার মূল লক্ষ্য হল দেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে নিজেদের দুর্দশার কথা তুলে ধরা এবং সংসদের বাদল অধিবেশনে নিজেদের বঞ্চনার ইতিহাস নথিভুক্ত করা।
কেন এই দিল্লী অভিযান?
এই প্রতিবাদী কর্মসূচীর মূল উদ্দেশ্য হল জাতীয় স্তরে নিজেদের সমস্যাকে তুলে ধরা এবং কেন্দ্রীয় সরকার ও বিরোধী দলগুলির কাছ থেকে হস্তক্ষেপের আর্জি জানানো। ২১শে জুলাই থেকে সংসদের অধিবেশন শুরু হচ্ছে, এবং এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে বাংলার বঞ্চিত শিক্ষকরা নিজেদের দাবী আদায়ের জন্য একগুচ্ছ কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন।
- রামলীলা ময়দানে অবস্থান-বিক্ষোভ: দিল্লিতে পৌঁছে তাঁরা ঐতিহাসিক রামলীলা ময়দানে একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করবেন। এই বিক্ষোভের মাধ্যমে তাঁরা দেশবাসীর কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিতে চান।
- রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ: তাঁদের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতাদের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের সমস্যার কথা জানাবেন। তাঁরা আশা করছেন, দেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব তাঁদের প্রতি হওয়া অবিচারের কথা শুনবেন এবং যোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
- প্রেস কনফারেন্স ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনা: ২৪শে জুলাই দিল্লী প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক সম্মেলন এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এই সভায় দিল্লির নাগরিক সমাজ, শিক্ষক এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যাতে তাঁদের সমস্যার কথা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়।
- লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ: দিল্লী জুড়ে লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার লাগানোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টাও করা হবে।
সুপারনিউমেরারি পোস্ট এবং আইনি লড়াই
এই আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াইও চালিয়ে যাচ্ছেন এই শিক্ষকরা। সুপারনিউমেরারি পোস্ট সংক্রান্ত একটি রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয়েছে, যা তাঁদের মামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তাঁদের আশা, এই রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে একটি ওপেন কোর্ট হিয়ারিং-এর সুযোগ পাওয়া যাবে, যা তাঁদের পক্ষে ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসতে পারে। আইনজীবীদের মতে, যেহেতু প্যানেল বাতিলের মূল উদ্দেশ্যই সফল হয়েছে, তাই এই রিভিউ পিটিশন তাঁদের লড়াইকে আরও মজবুত করবে।
এই বঞ্চিত শিক্ষকদের দিল্লী অভিযান শুধুমাত্র একটি প্রতিবাদ নয়, এটি তাঁদের দীর্ঘদিনের লড়াই, বঞ্চনা এবং অপমানের বিরুদ্ধে এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। তাঁরা আশা করছেন, এই যাত্রার মাধ্যমে তাঁদের সমস্যার সমাধান হবে এবং তাঁরা দ্রুত নিজেদের সম্মান ও অধিকার ফিরে পাবেন। এই ঐতিহাসিক লড়াইয়ে তাঁদের সাফল্য কামনা করি।