Pay Commission: সরকারি কর্মচারীদের বেতন কতটা বাড়তে পারে? জানুন সর্বশেষ তথ্য

Pay Commission: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর সামনে এসেছে। ভারত সরকার অষ্টম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশন (8th Central Pay Commission) গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার পর থেকে লক্ষ লক্ষ কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের মধ্যে বেতন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সুবিধা নিয়ে নতুন করে আশা জেগেছে। আসুন, এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
অষ্টম বেতন কমিশনের গঠন ও সময়সীমা
- আনুষ্ঠানিক ঘোষণা: কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৫ সালের জানুয়ারী মাসে অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের বিষয়টি অনুমোদন করেছে।
- কার্যকরের সম্ভাব্য তারিখ: ঐতিহ্যগতভাবে, প্রতি দশ বছর অন্তর নতুন বেতন কমিশন গঠিত হয়। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ ২০১৬ সালে কার্যকর হয়েছিল। সেই অনুযায়ী, অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি ১ জানুয়ারী, ২০২৬ থেকে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- বর্তমান পরিস্থিতি (মে, ২০২৫): যদিও কমিশন গঠনের ঘোষণা করা হয়েছে, তবে এখনও কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের নিয়োগ এবং কমিশনের কার্যপরিধি (Terms of Reference – ToR) চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। অর্থ মন্ত্রক এই কমিশনের জন্য বিভিন্ন পদে কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে, শীঘ্রই এই বিষয়ে আরও স্পষ্টতা আসবে। জাতীয় পরিষদের যুগ্ম পরামর্শদাতা কমিটি (NC-JCM) ইতিমধ্যে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর, ন্যূনতম বেতন এবং অন্যান্য দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রস্তুত করছে, যা ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে।
কর্মচারীদের মূল প্রত্যাশা
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা অষ্টম বেতন কমিশনের কাছে মূলত নিম্নলিখিত বিষয়গুলিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন:
- ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর: বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সপ্তম বেতন কমিশনে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ছিল ২.৫৭। অষ্টম বেতন কমিশনের ক্ষেত্রে এটি কতটা বাড়বে, তা নিয়ে কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৮৬ বা তার বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে, যদিও কিছু কর্মচারী সংগঠন ৩.৬৮ পর্যন্ত ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের দাবি করছে। সরকার এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
- ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধি: ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে ন্যূনতম বেতনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। আশা করা হচ্ছে, এর ফলে কর্মচারীদের মোট বেতনে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটবে, যা বর্তমান মূল্যবৃদ্ধির বাজারে স্বস্তি দেবে। কিছু প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, মূল বেতনে ২০% থেকে ৩৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি হতে পারে।
- অন্যান্য ভাতা: মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance – DA), বাড়ি ভাড়া ভাতা (House Rent Allowance – HRA), ভ্রমণ ভাতা (Travel Allowance – TA) এবং অন্যান্য বিশেষ ভাতার সংশোধনও প্রত্যাশিত। জানা যাচ্ছে, নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হলে মহার্ঘ ভাতা মূল বেতনের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। বর্তমানে মহার্ঘ ভাতা ৫৫%এ পৌঁছেছে।
- পেনশনভোগীদের সুবিধা: বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি লক্ষ লক্ষ পেনশনভোগীর জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের পেনশনও নতুন বেতন কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
- পে ম্যাট্রিক্সের সংশোধন: বর্তমান পে ম্যাট্রিক্সে কিছু সংশোধন এবং বেতন স্তরের সরলীকরণের প্রত্যাশাও রয়েছে।
সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও আগামী পদক্ষেপ
অষ্টম বেতন কমিশন গঠন এবং তার সুপারিশ কার্যকর করা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কমিশন বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, যেমন কর্মচারী ইউনিয়ন, বিভিন্ন মন্ত্রক এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুচিন্তিত রিপোর্ট তৈরি করবে। এই রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দেওয়ার পর, সরকার তা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। সাধারণত, কমিশন তার রিপোর্ট জমা দিতে গঠন হওয়ার পর থেকে ১৫ থেকে ১৮ মাস সময় নিতে পারে। সেক্ষেত্রে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি বা তার পরে রিপোর্ট জমা পড়তে পারে এবং সুপারিশগুলি কার্যকর হতে ২০২৭ সালের শুরু পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে, যখনই এটি কার্যকর হোক না কেন, কর্মচারীরা ১ জানুয়ারী, ২০২৬ থেকে এরিয়ার (বকেয়া) পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এই কমিশন লক্ষাধিক কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীর আর্থিক সুরক্ষা এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনে এই বিষয়ে আরও বিশদ তথ্য পাওয়া যাবে।