Dearness Allowance: রোপাতে নেই ডিএ-র উল্লেখ, ডিএ না দেওয়ার ষড়যন্ত্র ফাঁস করলেন আইনজীবী

Dearness Allowance: পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তাল। এই পরিস্থিতিতে আইনজীবী ফিরদৌস সামিম ডিএ মামলার খুঁটিনাটি এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তাঁর মতে, ডিএ কোনও দয়ার দান নয়, এটি কর্মচারীদের আইনত অধিকার। রোপা (ROPA) ২০১৯ এ ডিএ -র উল্লেখ না করে গভীর ষড়যন্ত্র করেছে মমতা সরকার, এমনটাই বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি।
আইনজীবী সামিম উল্লেখ করেছেন যে রাজ্য সরকার ডিএ মামলায় ছয়বার পরাজিত হয়েছে এবং বিষয়টি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। আদালত প্রাথমিকভাবে ৫০% ডিএ দেওয়ার কথা বললেও পরে তা ২৫%-এ নামিয়ে আনে এবং রাজ্যকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশ দেয়, রাজ্যের আর্থিক সংকটের অজুহাত এক্ষেত্রে গ্রাহ্য করা হয়নি।
এআইসিপিআই (AICPI) এবং ডিএ:
আইনজীবী ফিরদৌস সামিম জোর দিয়ে বলেছেন যে ২০০৯ সালের রোপা (ROPA) বিধি অনুযায়ী, ডিএ অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI)-এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তিনি বলেন, “ডিএ অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স এর সঙ্গে সাযুজ্যে দিতে হবে।” এই এআইসিপিআই সারা দেশে অভিন্ন এবং কেন্দ্র সরকারও এই সূচক মেনেই ডিএ প্রদান করে। বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও এই এআইসিপিআই মেনেই কর্মচারীদের ডিএ দেওয়া হতো এবং তা রুলসে অন্তর্ভুক্ত থাকায় আইনত বাধ্যতামূলক ছিল। সামিমের ভাষায়, “এআইসিপিআই মেনেই কর্মচারীদের ডিএ দেওয়ার কথা যেহেতু রোপা রুলসে বলা ছিল তাই ওটা লিগালি বাইন্ডিং ইফেক্ট হয়েছে।”
আইনজীবী সামিম আরও উল্লেখ করেন যে পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বছরে দুবার ডিএ দেওয়ার রীতি মেনে নিয়েছিল। রোপা বিধিতে এআইসিপিআই অনুযায়ী ডিএ দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকায় এটি কর্মচারীদের একটি বিধিবদ্ধ ও আইনগত অধিকারে পরিণত হয়েছে, যা হাইকোর্টও স্বীকার করেছে।
রোপা ২০১৯ এবং মমতা সরকারের ভূমিকা:
আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে তৈরি হওয়া রোপা ২০১৯ বিধি প্রসঙ্গে। ফিরদৌস সামিম স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, “রোপা ২০১৯ এ কোন ডিএ-র প্রভিশন রাখেননি কারণ, মমতা ব্যানার্জী কর্মচারীদের আইনসঙ্গত অধিকার হিসেবে ডিএ দেবেনই না।“ তাঁর মতে, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে তৈরি এই রোপা ২০১৯-এ ডিএ সংক্রান্ত কোনও উল্লেখ না থাকায় কর্মচারীদের এই অধিকারটিকেই অস্বীকার করা হয়েছে। এর ফলে, আইনগতভাবে ডিএ আদায়ের পথ আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ আদালতের পক্ষে আইনের বাইরে গিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়।
এই পরিস্থিতি বামফ্রন্ট সরকারের নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত, যেখানে ডিএ-কে কর্মচারীদের আইনগত অধিকার হিসেবে সুনিশ্চিত করা হয়েছিল। বর্তমান সরকারের এই অবস্থান রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে। ডিএ মামলা এখন কোন পথে এগোয় এবং কর্মচারীরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হন কিনা, সেটাই দেখার।