Bangla Shasya Bima: বাংলা শস্য বীমা রবি মরশুম ২০২৫-২৬: আবেদন পদ্ধতি, প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও বিস্তারিত গাইডলাইন
Bangla Shasya Bima: রাজ্যের কৃষকদের জন্য সুখবর। রবি মরশুমের চাষবাসের জন্য ‘বাংলা শস্য বীমা’ (Bangla Shasya Bima) বা BSB প্রকল্পের আওতায় আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০২৫-২৬ সালের এই রবি মরশুমে শস্য বীমার দায়িত্ব পেয়েছে এসবিআই জেনারেল ইন্স্যুরেন্স (SBI General Insurance)। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনও কারণে ফসলের ক্ষতি হলে যাতে কৃষকরা আর্থিক সুরক্ষা পান, সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। কীভাবে ফর্ম ফিলাপ করবেন এবং কী কী নথিপত্র প্রয়োজন, তার বিস্তারিত তথ্য নিচে আলোচনা করা হলো।
বীমার আওতাভুক্ত ফসলসমূহ
চলতি রবি মরশুমে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফসলকে এই বীমার আওতায় আনা হয়েছে। চাষিরা নিম্নলিখিত ফসলগুলির জন্য বীমার আবেদন করতে পারবেন:
- আলু
- বোরো ধান
- গম, সরষে, ছোলা, খেসারি ও মসুর ডাল
- রবি ভুট্টা এবং গ্রীষ্মকালীন ভুট্টা
- মুগ, তিল, বাদাম এবং আখ
ফর্ম ফিলাপ করার সঠিক পদ্ধতি
বাংলা শস্য বীমার আবেদন পত্রটি নির্ভুলভাবে পূরণ করা অত্যন্ত জরুরি। নিচে ধাপে ধাপে পদ্ধতিটি দেওয়া হলো:
১. কৃষকের ব্যক্তিগত তথ্য
ফর্মের একদম শুরুতে কৃষকের নাম স্পষ্ট করে (বাংলা বা ইংরেজিতে) লিখতে হবে। এরপর পিতা, মাতা, স্বামী বা অভিভাবকের নাম নির্দিষ্ট ঘরে বসাতে হবে। কৃষকের বয়স, লিঙ্গ, জাতি (তপশিলি জাতি/উপজাতি/ওবিসি/সাধারণ) এবং মোবাইল নম্বর সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। মনে রাখবেন, ভোটার কার্ড নম্বর এবং আধার কার্ড নম্বর দেওয়া আবশ্যিক।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন২. ঠিকানা ও আইডি সংক্রান্ত তথ্য
- ঠিকানা: কৃষকের গ্রামের নাম (মৌজা), গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক এবং জেলার নাম সঠিকভাবে লিখতে হবে।
- কেসিসি (KCC): কিষাণ ক্রেডিট কার্ড থাকলে ‘হ্যাঁ’ এবং না থাকলে ‘না’ বক্সে টিক দিন।
- কৃষক বন্ধু আইডি: এটি বাধ্যতামূলক। যদি আপনার আইডি জানা না থাকে, তবে ‘কৃষক বন্ধু’ পোর্টালে গিয়ে ‘নথিভুক্ত কৃষকের তথ্য’ অপশনে ভোটার কার্ড নম্বর দিয়ে সার্চ করে আইডি জেনে নিন এবং ফর্মে লিখুন।
৩. জমি ও ফসলের বিবরণ
জমির তথ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে:
- যে ফসলের জন্য বীমা করছেন তার নাম লিখুন।
- জমিটি যে ব্লকে অবস্থিত, সেই ব্লক, গ্রাম পঞ্চায়েত ও মৌজার নাম উল্লেখ করুন।
- জমির খতিয়ান ও দাগ নম্বর বসান।
- বীমার জন্য প্রস্তাবিত জমির পরিমাণ ‘একর’ এককে লিখতে হবে (যেমন- ১০ শতক হলে ০.১০ একর)।
- জমিটি নিজস্ব নাকি ভাগচাষে নেওয়া, তা উল্লেখ করতে হবে এবং ফসল রোপণের তারিখ (সম্ভাব্য বা প্রকৃত) বসাতে হবে।
৪. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ
আধার কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করা আছে এমন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দেওয়াই শ্রেয়। ব্যাঙ্কের নাম, ব্রাঞ্চ, অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং IFSC কোড পাসবই দেখে নির্ভুলভাবে লিখুন।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র (Documents)
আবেদনপত্রের সঙ্গে নিম্নলিখিত নথিপত্রগুলির জেরক্স কপি জমা দিতে হবে এবং প্রত্যেকটিতে নিচে নিজের সই (Self-attested) করতে হবে:
- ভোটার কার্ড।
- আধার কার্ড।
- ব্যাঙ্ক পাসবইয়ের প্রথম পাতা।
- জমির খতিয়ান বা সাম্প্রতিক পর্চা (২০২৩-২৪ সালের)।
জমা দেওয়ার নিয়ম
ফর্মটি সম্পূর্ণ পূরণ করার পর শেষের ঘোষণাপত্রটি পড়ে সাক্ষী ও কৃষকের সই করতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট আধিকারিকের কাছে এটি জমা দিন। মনে রাখবেন, এই ফর্মটি অনলাইনে জমা দেওয়া যায় না, এটি সম্পূর্ণ অফলাইন প্রক্রিয়া।
ফর্ম জমা দেওয়ার সময় নিচের ‘প্রাপ্তি স্বীকার’ (Receipt) অংশটি পূরণ করে নিয়ে যাবেন। আধিকারিকরা সেটি সই ও স্ট্যাম্প দিয়ে আপনাকে ফেরত দেবেন, যা ভবিষ্যতে প্রমাণের জন্য যত্ন সহকারে রেখে দিতে হবে।