Income Tax Notice: আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কি আয়কর দপ্তরের স্ক্যানারে? এই ৭টি বড় লেনদেনে নজর রাখছে সরকার

Income Tax Notice: আপনি কি জানেন যে আপনার বড় অঙ্কের নগদ লেনদেনগুলির উপর আয়কর দপ্তরের কড়া নজর রয়েছে? কালো টাকার লেনদেন রুখতে এবং কর ফাঁকি দেওয়া আটকাতে ভারত সরকার কিছু নিয়ম চালু করেছে, যার মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আপনার উচ্চ মূল্যের লেনদেনের তথ্য সোজা আয়কর দপ্তরের কাছে পৌঁছে দেয়। আসুন, এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
স্টেটমেন্ট অফ ফিনান্সিয়াল ট্রানজ্যাকশন (SFT) কী?
আয়কর আইন, ১৯৬১-এর ধারা 285BA অনুযায়ী, কিছু নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাঙ্ক, মিউচুয়াল ফান্ড, রেজিস্টার এবং বন্ড ইস্যুকারী সংস্থাগুলির জন্য বাধ্যতামূলকভাবে আপনার উচ্চ মূল্যের লেনদেনের তথ্য আয়কর দপ্তরের কাছে জমা দিতে হয়। এই তথ্য ‘ফর্ম 61A’-এর মাধ্যমে জমা করা হয়, যা আপনার ‘বার্ষিক তথ্য বিবৃতি’ বা Annual Information Statement (AIS)-এর একটি অংশ। এর ফলে, আয়কর দপ্তর সহজেই আপনার আর্থিক লেনদেনের উপর নজর রাখতে পারে।
কোন কোন লেনদেনের উপর নজর রাখা হয়?
এখানে সেই সমস্ত লেনদেনের একটি তালিকা দেওয়া হলো, যেগুলির উপর আয়কর দপ্তরের বিশেষ নজর রয়েছে:
- সেভিংস অ্যাকাউন্টে নগদ জমা: যদি আপনি এক আর্থিক বছরে আপনার এক বা একাধিক সেভিংস অ্যাকাউন্টে মোট ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ জমা করেন, তবে ব্যাঙ্ক সেই তথ্য আয়কর দপ্তরকে জানাতে বাধ্য।
- কারেন্ট অ্যাকাউন্টে নগদ জমা বা তোলা: যদি আপনার কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে এক আর্থিক বছরে মোট ৫০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ জমা বা তোলা হয়, তবে সেই তথ্যও আয়কর দপ্তরের কাছে পৌঁছায়।
- ফিক্সড ডিপোজিট (FD): এক বা একাধিক ফিক্সড ডিপোজিটে যদি এক বছরে মোট ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ জমা করা হয়, তবে ব্যাঙ্ক এই তথ্য রিপোর্ট করে।
- ক্রেডিট কার্ড বিল পেমেন্ট: যদি আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিল মেটানোর জন্য এক আর্থিক বছরে ১ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ জমা করেন, অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি পেমেন্ট করেন, তবে সেই তথ্য আয়কর দপ্তরের নজরে আসে।
- সম্পত্তি লেনদেন: যদি আপনি ৩০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি মূল্যের কোনো স্থাবর সম্পত্তি কেনা-বেচা করেন, তবে রেজিস্ট্রি অফিস সেই লেনদেনের তথ্য আয়কর দপ্তরকে জানায়।
- শেয়ার, বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ: যদি আপনি শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড বা মিউচুয়াল ফান্ডে এক আর্থিক বছরে মোট ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি বিনিয়োগ করেন, তবে সেই তথ্যও রিপোর্ট করা হয়।
- বিদেশী মুদ্রা কেনা-বেচা: যদি আপনি এক বছরে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি মূল্যের বিদেশী মুদ্রা কেনা-বেচা করেন, তবে সেই তথ্যও আয়কর দপ্তরের কাছে যায়।
আপনার কী করণীয়?
এই নিয়মগুলির উদ্দেশ্য আপনাকে ভয় দেখানো নয়, বরং আর্থিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত:
- সঠিক তথ্য দিন: আপনার আয়কর রিটার্ন (ITR) ফাইল করার সময় সমস্ত আয়ের উৎস এবং উচ্চ মূল্যের লেনদেনের সঠিক তথ্য দিন।
- PAN কার্ড ব্যবহার করুন: যেকোনো বড় লেনদেনের সময় আপনার PAN নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করুন।
- AIS চেক করুন: আপনার ফর্ম 26AS এবং AIS নিয়মিত দেখুন, যাতে কোনো গড়মিল থাকলে আপনি দ্রুত তার সমাধান করতে পারেন।
সচেতন থাকুন এবং নিয়ম মেনে চলুন। এর ফলে আপনি আয়কর দপ্তরের থেকে কোনো রকম নোটিশ পাওয়া বা জরিমানার হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।