Income Tax

ITR: আয়কর রিটার্ন ফাইল করার আগে সাবধান! আইটিআর ফর্মে এসেছে এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলি

ITR Filing 2025: আয়কর রিটার্ন (আইটিআর) ফাইল করার সময় এসে গেছে, এবং প্রতি বছরের মতো এই বছরেও ফর্মগুলিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস (সিবিডিটি) ইতিমধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের (অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার ২০২৫-২৬) জন্য সংশোধিত আইটিআর ফর্মগুলি ই-ফাইলিংয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। করদাতাদের এই পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি যাতে তারা সঠিকভাবে তাদের রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।

আসুন দেখে নেওয়া যাক এই বছরের আইটিআর ফর্মগুলিতে প্রধান কী কী পরিবর্তন করা হয়েছে:

আইটিআর-১ (সহজ) এবং আইটিআর-৪ (সুগম)

এই ফর্মগুলি মূলত সেইসব ব্যক্তিদের জন্য যাদের বেতন, একটিমাত্র গৃহসম্পত্তি, অন্যান্য উৎস থেকে আয় (যেমন সুদ) এবং কৃষি আয় (৫০০০ টাকা পর্যন্ত) রয়েছে। ব্যবসার আয় আছে এমন ব্যক্তিরা (প্রিজাম্পটিভ স্কিমের অধীনে) আইটিআর-৪ ব্যবহার করেন।

  • নতুন সংযোজন: এই বছর থেকে, করদাতারা ধারা ১১২এ-এর অধীনে দীর্ঘমেয়াদী মূলধনী লাভ (লং-টার্ম ক্যাপিটাল গেইনস বা এলটিসিজি) থাকলেও আইটিআর-১ এবং আইটিআর-৪ ফাইল করতে পারবেন, যদি এই লাভের পরিমাণ ১.২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয় এবং কোনও ব্রট ফরওয়ার্ড বা ক্যারি ফরওয়ার্ড লস না থাকে।
  • টিডিএস সময়সূচী (Schedule-TDS): যে ধারার অধীনে টিডিএস কাটা হয়েছে, সেটি এখন টিডিএস সময়সূচীতে উল্লেখ করতে হবে।

আইটিআর-২

এই ফর্মটি সেইসব ব্যক্তি এবং হিন্দু অবিভক্ত পরিবার (HUF) এর জন্য যাদের ব্যবসার বা পেশার আয় নেই, কিন্তু মূলধনী লাভ রয়েছে।

  • মূলধনী লাভের বিভাজন: ২৩শে জুলাই, ২০২৪-এর আগে এবং পরে হওয়া মূলধনী লাভের জন্য আলাদাভাবে তথ্য দিতে হবে।
  • শেয়ার বাইব্যাকের ক্ষেত্রে মূলধনী ক্ষতি: ১লা অক্টোবর, ২০২৪-এর পর থেকে, শেয়ার বাইব্যাকের ফলে হওয়া মূলধনী ক্ষতিকে অন্যান্য উৎস থেকে আয়ের (ডিভিডেন্ড আয়) সাথে সমন্বয় করা যাবে।
  • সম্পদ ও দায়বদ্ধতা রিপোর্টিং সীমা বৃদ্ধি: সম্পদ ও দায়বদ্ধতা জানানোর সীমা বাড়িয়ে ১ কোটি টাকা করা হয়েছে (যদি মোট আয় এই পরিমাণের বেশি হয়)।
  • বর্ধিত রিপোর্টিং: ধারা ৮০সি এবং ১০(১৩এ)-এর অধীনে প্রাপ্ত ছাড়ের জন্য আরও বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।

আইটিআর-৩

এই ফর্মটি সেইসব ব্যক্তি এবং হিন্দু অবিভক্ত পরিবার (HUF) এর জন্য যাদের ব্যবসার বা পেশার আয় রয়েছে।

  • যুক্তিসঙ্গতকরণ: দীর্ঘমেয়াদী মূলধনী লাভ (এলটিসিজি) এবং স্বল্পমেয়াদী মূলধনী লাভ (এসটিসিজি)-এর হোল্ডিং পিরিয়ড, হার এবং ইনডেক্সেশনের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন ও যুক্তিসঙ্গতকরণ করা হয়েছে।

আইটিআর-৫

এই ফর্মটি ফার্ম, এলএলপি (LLP), এওপি (AOP), বিওআই (BOI) এবং কৃত্রিম বিচারগত ব্যক্তিদের (Artificial Juridical Persons) জন্য প্রযোজ্য।

  • মূলধনী লাভের বিভাজন: আইটিআর-২-এর মতোই, ২৩শে জুলাই, ২০২৪-এর আগে এবং পরে হওয়া মূলধনী লাভের জন্য আলাদাভাবে তথ্য দিতে হবে।
  • শেয়ার বাইব্যাকের ক্ষেত্রে মূলধনী ক্ষতি: ১লা অক্টোবর, ২০২৪-এর পর থেকে, শেয়ার বাইব্যাকের ফলে হওয়া মূলধনী ক্ষতিকে অন্যান্য উৎস থেকে আয়ের (ডিভিডেন্ড আয়) সাথে সমন্বয় করা যাবে।
  • ধারা ৪৪বিবিসি-এর সংযোজন: ক্রুজ ব্যবসার (cruise business) জন্য ধারা ৪৪বিবিসি-এর উল্লেখ যোগ করা হয়েছে।
  • টিডিএস সময়সূচী (Schedule-TDS): টিডিএস সেকশন কোড টিডিএস সময়সূচীতে রিপোর্ট করতে হবে।

আইটিআর-৬

এই ফর্মটি সেইসব সংস্থাগুলির জন্য যারা ধারা ১১-এর অধীনে ছাড় দাবি করে না।

  • মূলধনী লাভের বিভাজন: আইটিআর-২ এবং আইটিআর-৫-এর মতোই, ২৩শে জুলাই, ২০২৪-এর আগে এবং পরে হওয়া মূলধনী লাভের জন্য আলাদাভাবে তথ্য দিতে হবে।
  • শেয়ার বাইব্যাকের ক্ষেত্রে মূলধনী ক্ষতি: ১লা অক্টোবর, ২০২৪-এর পর থেকে, শেয়ার বাইব্যাকের ফলে হওয়া মূলধনী ক্ষতিকে অন্যান্য উৎস থেকে আয়ের (ডিভিডেন্ড আয়) সাথে সমন্বয় করা যাবে।
  • ধারা ৪৪বিবিসি-এর সংযোজন: ক্রুজ ব্যবসার জন্য ধারা ৪৪বিবিসি-এর উল্লেখ যোগ করা হয়েছে।
  • শিডিউল বিপি-তে পরিবর্তন (বিধি ১০টিআইএ): অপরিশোধিত হীরা বিক্রির লাভ এখন মোট প্রাপ্তির ৪ শতাংশ বা তার বেশি হতে হবে।
  • অন্যান্য পরিবর্তন: ধারা ২৪(বি)-এর অধীনে দাবিকৃত ছাড় এবং টিডিএস সেকশন কোড টিডিএস সময়সূচীতে রিপোর্ট করার জন্য পরিবর্তন করা হয়েছে।

মূল বিষয় এবং ব্যবহারিক পরামর্শ:

  • সঠিক ফর্ম নির্বাচন: আপনার আয়ের উৎস এবং পরিমাণের উপর নির্ভর করে সঠিক আইটিআর ফর্ম নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভুল ফর্ম দাখিল করলে আপনার রিটার্ন ত্রুটিপূর্ণ বলে গণ্য হতে পারে।
  • পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে অবগত থাকুন: এই পরিবর্তনগুলি আপনার করযোগ্য আয় এবং করের পরিমাণকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই, রিটার্ন দাখিল করার আগে এই পরিবর্তনগুলি ভালোভাবে জেনে নিন।
  • প্রয়োজনীয় নথি প্রস্তুত রাখুন: প্যান কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ, ফর্ম ১৬/১৬এ, বিনিয়োগের প্রমাণপত্র, মূলধনী লাভের স্টেটমেন্ট ইত্যাদি সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি হাতের কাছে রাখুন।
  • সময়সীমার মধ্যে দাখিল করুন: জরিমানা এড়াতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আপনার আয়কর রিটার্ন দাখিল করুন।
  • পেশাদার পরামর্শ: যদি আপনার আয়কর সংক্রান্ত বিষয়ে কোনওরকম সন্দেহ বা জটিলতা থাকে, তবে একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা কর উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

আয়কর রিটার্ন দাখিল করা প্রতিটি দায়িত্বশীল নাগরিকের কর্তব্য। এই পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে অবগত থেকে এবং সঠিকভাবে রিটার্ন দাখিল করে আপনি দেশের উন্নয়নে আপনার অবদান রাখতে পারেন।

WBPAY

The site wbpay.in is a collaborative platform voluntarily monitored by a dedicated group of reporters of West Bengal. The site features insightful posts and articles authored by experts in various fields, ensuring high-quality content that informs and engages the community. With a focus on transparency and public service, wbpay.in aims to provide valuable resources and updated news relevant to the citizens and employees of West Bengal. For any query please mail us at [email protected]

Related Articles

Back to top button