New Labour Code: বেতন কাঠামোয় বড় বদল! হাতে পাওয়া টাকা কি কমবে? জানুন বিস্তারিত
New Labour Code: দেশে চারটি নতুন লেবার কোড বা শ্রম বিধি কার্যকর হওয়া নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। এই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে চাকরিজীবীদের বেতনের কাঠামোয় বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। মূলত কর্মীদের ‘বেতন’-এর সংজ্ঞা এবং হাতে পাওয়া বেতনের (Take-home pay) পরিমাণে তার প্রভাব নিয়েই এখন নানা প্রশ্ন উঠছে। মূল উদ্বেগের কারণ হলো নতুন নিয়ম অনুযায়ী মোট রেমুনারেশন বা পারিশ্রমিকের অন্তত ৫০ শতাংশ ‘বেতন’ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
এতদিন পর্যন্ত অধিকাংশ কোম্পানি তাদের কর্মীদের ‘কস্ট-টু-কোম্পানি’ বা CTC-এর মধ্যে মূল বেতন বা Basic Salary-র অনুপাত কম রাখত এবং বিভিন্ন অ্যালাউন্স দিয়ে বাকিটা পূরণ করত। কিন্তু নতুন লেবার কোড কার্যকর হলে এই কাঠামো বদলাতে বাধ্য হবে কোম্পানিগুলি। এর ফলে প্রভিডেন্ট ফান্ড (PF) এবং গ্র্যাচুইটির মতো বিষয়গুলিতে সরাসরি প্রভাব পড়বে।
বেতনের নতুন সংজ্ঞা ও ৫০ শতাংশের নিয়ম
নতুন শ্রম বিধি অনুযায়ী, বেতনের সংজ্ঞাকে মানক বা স্ট্যান্ডার্ড করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, বেসিক পে (Basic Pay), মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) এবং রিটেনিং অ্যালাউন্স মিলিয়ে কর্মীদের মোট পারিশ্রমিকের অন্তত ৫০ শতাংশ হতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, এতে কর্মীদের ওপর কী প্রভাব পড়বে?
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- পিএফ কন্ট্রিবিউশন বৃদ্ধি: এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (EPF)-এর হিসাব হয় বেসিক পে-র ওপর ভিত্তি করে। যেখানে কর্মী ও নিয়োগকর্তা উভয়েই ১২% করে জমা দেন। বেসিক পে বাড়লে পিএফ বাবদ কাটার পরিমাণও বাড়বে।
- গ্র্যাচুইটি বৃদ্ধি: গ্র্যাচুইটির হিসাবও বেসিক পে-র ওপর নির্ভর করে। তাই বেস বাড়লে অবসরের সময় প্রাপ্ত গ্র্যাচুইটির পরিমাণও বাড়বে।
হাতে পাওয়া বেতন কি কমবে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন নিয়মের ফলে কর্মীদের হাতে পাওয়া বেতন বা ‘টেক-হোম স্যালারি’ কমতে পারে। ইন্ডিয়া টুডের রিপোর্টে Accord Juris-এর ম্যানেজিং পার্টনার আলে রিজভি (Alay Razvi)-র মত অনুযায়ী, বিধিবদ্ধ বা স্ট্যাচুটরি কন্ট্রিবিউশনের ভিত্তি বাড়ার ফলে পিএফ বাবদ বেশি টাকা কাটা যাবে। যদি কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের গ্রস স্যালারি বা মোট বেতন না বাড়ায়, তবে পিএফ-এ বেশি টাকা জমা পড়ার কারণে মাসের শেষে হাতে পাওয়া টাকার অঙ্ক কমে যেতে পারে।
| বিষয় | বর্তমান পরিস্থিতি | নতুন লেবার কোড প্রভাব |
|---|---|---|
| বেসিক স্যালারি | সাধারণত কম রাখা হয় | মোট বেতনের অন্তত ৫০% হবে |
| পিএফ ও গ্র্যাচুইটি | কম বেসিকের কারণে কম হয় | বেসিক বাড়লে পরিমাণ বাড়বে |
| হাতে পাওয়া বেতন | তুলনামূলক বেশি | কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি |
ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইন্ডিয়ান স্টাফিং ফেডারেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সুচিতা দত্ত জানিয়েছেন, খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোম্পানিগুলো তাদের সেলারি স্ট্রাকচার বা বেতন কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে পারে, যার ফলে নেট স্যালারি কমতে পারে। তবে এর ইতিবাচক দিক হলো, পিএফ এবং গ্র্যাচুইটিতে বেশি টাকা জমা হওয়ার ফলে কর্মীদের অবসরকালীন নিরাপত্তা বা রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট আরও জোরদার হবে।
গিগ ওয়ার্কারদের জন্য সুখবর
শুধুমাত্র স্থায়ী কর্মী নয়, নতুন লেবার কোডে সুইগি (Swiggy), উবার (Uber), জেপ্টো (Zepto)-র মতো প্ল্যাটফর্মের গিগ ওয়ার্কারদের জন্যও সুখবর রয়েছে। নতুন নিয়মে এই কোম্পানিগুলিকে তাদের টার্নওভারের ১-২ শতাংশ গিগ ওয়ার্কারদের কল্যাণের জন্য আলাদা করে রাখতে হবে। এর ফলে কাজের নমনীয়তা বজায় রেখেই তাদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: নতুন নিয়ম অনুযায়ী কর্মীদের বেতন প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। আপাতত চূড়ান্ত নিয়মাবলী এবং কোম্পানি স্তরে এর বাস্তবায়নের দিকেই তাকিয়ে আছেন দেশের লক্ষ লক্ষ চাকরিজীবী।