চাকরি

SSC 2016 Case: ব্রেকিং! পরীক্ষা ছাড়াই পুরনো চাকরিতে ফেরা! ২৬,০০০ শিক্ষক নিয়োগ মামলায় কিছু শিক্ষকদের জয়

SSC 2016 Case: সুপ্রিম কোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ে, পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) ২৬,০০০ শিক্ষক নিয়োগ মামলায় বড়সড় জয় পেলেন শিক্ষকরা। ১৯শে সেপ্টেম্বর, সুপ্রিম কোর্টের ১৩ নম্বর কোর্টে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি অলোক আরাধ্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। অর্পণ বসু বনাম অরুণ কুমার রায় নামক এই মামলাটি, শিক্ষকদের পক্ষে এক নতুন দিশা নিয়ে এসেছে।

মামলার প্রেক্ষাপট

২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট, যার ফলে প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষকের চাকরি চলে যায়। এরপর, সুপ্রিম কোর্টও সেই রায় বহাল রাখে। তবে, মূল রায়ের ৪৭ নম্বর প্যারাগ্রাফে একটি বিশেষ নির্দেশ ছিল, যা নিয়েই তৈরি হয়েছিল নতুন জটিলতা। সেই প্যারাগ্রাফ অনুযায়ী, যে সমস্ত শিক্ষক আগের চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালের প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের পুরনো চাকরিতে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু, রাজ্য সরকার বা স্কুল সার্ভিস কমিশন সেই নির্দেশ কার্যকর না করায়, শিক্ষকরা আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন।

সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ও রায়

শুনানির সময়, শিক্ষকদের আইনজীবী সওয়াল করেন যে, ৪৭ নম্বর প্যারাগ্রাফ অনুযায়ী তাঁদের মক্কেলদের পুরনো চাকরিতে পুনর্বহাল করার কথা থাকলেও, রাজ্য সরকার তাঁদের নতুন করে এসএলএসটি (SLST) পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করছে, যা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের সরাসরি লঙ্ঘন।

আদালতের গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণগুলি হলো:

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন
  • পুরনো চাকরিতে ফেরার অধিকার: আদালত স্পষ্ট করে যে, যে সমস্ত শিক্ষক আগে থেকেই অন্য সরকারি স্কুলে কর্মরত ছিলেন এবং শুধুমাত্র বাড়ির কাছাকাছি আসার জন্য বা অন্য কোনো কারণে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের নতুন করে কোনো পরীক্ষায় বসার প্রয়োজন নেই।
  • সুপারনিউমারারি পদ তৈরি: যদি পুরনো স্কুলে পদ খালি না থাকে, সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে সুপারনিউমারারি বা অতিরিক্ত পদ তৈরি করে তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।
  • সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন: এই শিক্ষকদের শুধুমাত্র চাকরি ফিরিয়ে দিলেই হবে না, তাঁদের চাকরির ধারাবাহিকতা (Service Continuation) এবং অন্যান্য সমস্ত সুযোগ-সুবিধাও বহাল রাখতে হবে।

বিচারপতি সঞ্জয় কুমার বলেন, “শিক্ষকরা কি তাঁদের পুরনো চাকরিতেই ফিরে যেতে চান?” উত্তরে আইনজীবীরা ‘হ্যাঁ’ বলায়, আদালত রাজ্য সরকারকে দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়। আদালত মনে করে যে, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে সঠিকভাবে কার্যকর না করে বিচারব্যবস্থাকে অবমাননা করেছে।

শিক্ষকদের জন্য এর অর্থ কী?

এই রায়ের ফলে, যে সমস্ত শিক্ষক ২০০২, ২০০৪, বা ২০১৪ সাল থেকে চাকরিতে ছিলেন এবং ২০১৬ সালের প্রক্রিয়ায় যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা তাঁদের পুরনো চাকরি ফিরে পাবেন। তাঁদের আর নতুন করে কোনো অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হতে হবে না। এটি নিঃসন্দেহে ওই সকল শিক্ষকের জন্য এক বিরাট স্বস্তির খবর।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৭শে অক্টোবর ধার্য করা হয়েছে। আশা করা যায়, রাজ্য সরকার এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং যোগ্য শিক্ষকরা তাঁদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাবেন। এই রায় শুধুমাত্র শিক্ষকদের জয় নয়, এটি ন্যায়বিচারের জয়।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button