UPI PIN-Free: আর প্রয়োজন নেই পিনের! দীপাবলির আগেই চালু হয়ে গেল UPI-এর নতুন নিয়ম, কীভাবে ব্যবহার করবেন?

UPI PIN-Free: ডিজিটাল লেনদেনের জগতে এক নতুন দিগন্ত খুলে গেল। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে, ৮ অক্টোবর, ২০২৫ থেকে দেশজুড়ে চালু হয়ে গিয়েছে ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস বা UPI-এর বহুচর্চিত পিন-ফ্রি লেনদেন ব্যবস্থা। ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (NPCI) দ্বারা প্রবর্তিত এই নিয়মের ফলে কোটি কোটি ব্যবহারকারীর জন্য ডিজিটাল পেমেন্ট এখন আরও সহজ, দ্রুত এবং আগের চেয়ে অনেক বেশি সুরক্ষিত হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এই নতুন ব্যবস্থাটি ঠিক কীভাবে কাজ করছে এবং আপনি কীভাবে এর সুবিধা নিতে পারেন।
কীভাবে কাজ করছে এই নতুন পিন-ফ্রি ব্যবস্থা?
এই নতুন পদ্ধতিতে, লেনদেন অনুমোদন করার জন্য আপনার ৪ বা ৬ সংখ্যার গোপন পিন নম্বরের আর প্রয়োজন হচ্ছে না। এর পরিবর্তে, আপনার স্মার্টফোনের বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ, আপনি এখন আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেসিয়াল রিকগনিশন (মুখ স্ক্যান) ব্যবহার করে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারছেন।
যখনই আপনি কোনো পেমেন্ট করতে যাচ্ছেন, তখন পিন দেওয়ার প্রচলিত বিকল্পের পাশাপাশি আপনি নতুন বায়োমেট্রিক বিকল্পটিও দেখতে পাবেন:
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট: আপনার ফোনের সেন্সরে নির্দিষ্ট আঙুলটি ছোঁয়ালেই আপনার পেমেন্ট সঙ্গে সঙ্গে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
- ফেসিয়াল রিকগনিশন: ফোনের ফ্রন্ট ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে মুখ স্ক্যান করিয়েও আপনি লেনদেনটি অনুমোদন করতে পারবেন।
এই বায়োমেট্রিক তথ্য আপনার আধার ডেটাবেসের সাথে সংযুক্ত থাকায় এটি অত্যন্ত সুরক্ষিত একটি পদ্ধতি। যেহেতু প্রত্যেকের ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং মুখের গঠন সম্পূর্ণ আলাদা, তাই এই পদ্ধতিতে পরিচয় জালিয়াতির সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কোঠায়।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনদৈনিক লেনদেনের সীমা এবং অন্যান্য সুবিধা
বর্তমানে, এই পিন-ফ্রি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আপনি দৈনিক সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেন করতে পারবেন। ঘন ঘন ছোট অঙ্কের কেনাকাটার জন্য এই সীমা যথেষ্ট। NPCI জানিয়েছে যে, এই ব্যবস্থার জনপ্রিয়তা এবং সাফল্যের উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে এই সীমা বাড়ানোর কথা ভাবা হতে পারে।
এর পাশাপাশি, আধার-ভিত্তিক ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে UPI পিন সেট বা রিসেট করার সুবিধাও চালু হয়েছে। আগে UPI পিন ভুলে গেলে তা রিসেট করার জন্য ডেবিট কার্ডের বিবরণ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। এখন আপনি শুধুমাত্র আপনার মুখ স্ক্যান করিয়েই একটি নতুন পিন তৈরি করতে পারছেন, যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে অনেক বেশি সুবিধাজনক করে তুলেছে।
এই পরিবর্তনের সুফল
এই যুগান্তকারী পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ডিজিটাল পেমেন্টকে ভারতের সকল স্তরের মানুষের কাছে আরও সহজলভ্য এবং নিরাপদ করে তোলা। অনেকেই, বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকরা, পিন নম্বর মনে রাখতে বা ব্যবহার করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। বায়োমেট্রিক পদ্ধতি সেই বাধা দূর করেছে। তাছাড়া, পিন চুরি হওয়া বা পিছনে থেকে উঁকি মেরে দেখে নেওয়ার মতো জালিয়াতির ঘটনাও এর ফলে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। ৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই নতুন অধ্যায় ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতিকে নিঃসন্দেহে এক নতুন পথে চালিত করছে।