Gold Loan: বদলাচ্ছে গোল্ড লোনের নিয়ম: ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতারা কি ছাড় পাবেন?

Gold Loan: ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) সম্প্রতি গোল্ড লোন বা সোনার বিনিময়ে ঋণ সংক্রান্ত একটি নতুন খসড়া নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। এই নির্দেশিকার লক্ষ্য হল স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, ঋণগ্রহীতাদের সুরক্ষা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উন্নতি সাধন করা। তবে, অর্থ মন্ত্রক ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের জন্য এই নিয়মগুলি শিথিল করার সুপারিশ করেছে। আসুন, এই খসড়া নির্দেশিকার মূল বিষয়গুলি এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
খসড়া নির্দেশিকার প্রধান দিকগুলি:
গোল্ড লোন ভারতে একটি জনপ্রিয় আর্থিক পরিষেবা, যার মাধ্যমে মানুষ তাদের সোনা বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণ করে। ব্যক্তিগত ঋণের তুলনায় এতে সুদের হার কম থাকে এবং কাগজপত্রের ঝামেলাও কম হয়। আরবিআই স্বচ্ছতার অভাব, বিভিন্ন ডিফল্ট পদ্ধতি এবং গ্রাহক সুরক্ষার অপর্যাপ্ততার মতো সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার জন্য গোল্ড লোন নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত একাধিক পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- লোন-টু-ভ্যালু (LTV) অনুপাত: LTV অনুপাত ৭৫% এ সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ, ঋণগ্রহীতারা তাদের সোনার মূল্যের সর্বাধিক ৭৫% পর্যন্ত ঋণ পেতে পারবেন।
- বন্ধকী সোনার উপর বিধিনিষেধ: সোনার কয়েনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম এবং সোনা ও রুপোর অলঙ্কারের ক্ষেত্রে মোট ১ কেজি পর্যন্ত বন্ধক রাখার সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বন্ধক রাখা সোনার উপর নতুন করে ঋণ নেওয়া যাবে না।
- মালিকানার প্রমাণ: অর্থপাচার এবং জালিয়াতি রোধ করতে ঋণগ্রহীতাদের বন্ধক রাখা সোনার মূল ইনভয়েস বা স্ব-ঘোষণা পত্র জমা দিতে হবে।
- সোনার মূল্যায়ন মান: সারা দেশে সোনার মূল্যায়ন ২২ ক্যারেট সোনার হারের ভিত্তিতে মানক করা হবে।
- ঋণ চুক্তির বিবরণ: ঋণ চুক্তিতে সোনার ওজন, মূল্যায়নের বিবরণ, ঋণের শর্তাবলী, নিলামের নিয়মাবলী এবং সোনা ফেরত দেওয়ার সময়সীমা সহ সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
- ঋণের অর্থ ব্যবহারের উপর নজরদারি: ঋণগ্রহীতাদের ঋণের অর্থের শেষ ব্যবহার নির্দিষ্ট করতে হবে এবং সহায়ক নথি জমা দিতে হবে।
- নিলাম প্রক্রিয়া: যদি সোনা নিলাম করা হয়, তবে তা যেন তার মূল্যের ৯০% এর কম দামে বিক্রি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে এবং উদ্বৃত্ত অর্থ ঋণগ্রহীতাকে ফেরত দিতে হবে।
অর্থ মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ:
অর্থ মন্ত্রক আরবিআইকে অনুরোধ করেছে যে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতারা (যারা ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেন) তাদের যেন এই নতুন নিয়ম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং নিয়মগুলি ২০২৬ সাল পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। এর উদ্দেশ্য হল নিম্ন-আয়ের পরিবার এবং ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের স্বার্থ রক্ষা করা, যারা গোল্ড লোনের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
নতুন নিয়মের সম্ভাব্য প্রভাব:
এই প্রস্তাবিত নিয়মগুলি কৃষক, দিনমজুর এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে তাদের গোল্ড লোন পেতে অসুবিধা হতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতি:
আরবিআই বর্তমানে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির কাছ থেকে মতামত সংগ্রহ করছে এবং আশা করা হচ্ছে যে অর্থ মন্ত্রকের সুপারিশগুলি চূড়ান্ত নির্দেশিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই নতুন নির্দেশিকাগুলি গোল্ড লোন বাজারকে আরও সুশৃঙ্খল এবং গ্রাহক-বান্ধব করে তোলার একটি প্রয়াস। চূড়ান্ত নিয়মাবলী প্রকাশের পর এর সম্পূর্ণ প্রভাব বোঝা যাবে।