OBC Case Update: নতুন OBC তালিকায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ! জানুন বিস্তারিত

OBC Case Update: বুধবার, কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নতুন ওবিসি তালিকার উপর একটি অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করেছে, যা রাজ্য জুড়ে একটি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যের নতুন ওবিসি তালিকা এবং সম্পর্কিত সমস্ত বিজ্ঞপ্তি ৩১শে জুলাই পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। এই রায়টি রাজ্যের সংরক্ষণ নীতির ভবিষ্যৎ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর এর প্রভাব নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু করেছে।
মামলার প্রেক্ষাপট
এই মামলার সূত্রপাত হয় যখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ কমিশনের সুপারিশে ১৪০টি নতুন সম্প্রদায়কে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী (ওবিসি) হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। এর ফলে সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওবিসিদের জন্য ১৭% সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আবেদনকারীদের মূল অভিযোগ ছিল যে, এই নতুন তালিকা তৈরির জন্য যে সমীক্ষার প্রয়োজন ছিল, তা সঠিকভাবে এবং যথাযথ নিয়ম মেনে করা হয়নি।
আদালতের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানিতে আবেদনকারীদের যুক্তির সাথে একমত হয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে যে, সমীক্ষা পদ্ধতির সমস্ত নথি এবং তথ্য আদালতে জমা দিতে হবে এবং সেগুলি পর্যালোচনার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এর আগে মন্তব্য করেছিলেন যে, রাজ্য সরকার যথাযথ তদন্ত ছাড়াই তাড়াহুড়ো করে তালিকা প্রকাশ করে একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
আদালত আরও উল্লেখ করেছে যে, এই স্থগিতাদেশের ফলে নতুন তালিকাভুক্ত সম্প্রদায়গুলি আপাতত ওবিসি সংরক্ষণের সুবিধা পাবে না। এই মামলার চূড়ান্ত রায় রাজ্যের সংরক্ষণ নীতি এবং সামাজিক গঠনে একটি বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পূর্ববর্তী রায় এবং তার প্রভাব
উল্লেখ্য, এর আগে ২২শে মে, ২০২৪-এ কলকাতা হাইকোর্ট একটি ঐতিহাসিক রায়ে ২০১০ সালের পর জারি করা প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করেছিল। আদালতের মতে, এই শংসাপত্রগুলি ১৯৯৩ সালের অনগ্রসর শ্রেণী আইন লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়েছিল। এই রায়ের ফলে রাজ্যের ওবিসি সংরক্ষণ নীতি নিয়ে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছিল এবং সেই বিতর্কের মধ্যেই নতুন তালিকা নিয়ে এই আইনি লড়াই শুরু হয়।
সরকারের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
অন্যদিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ কমিশন উভয়েই দাবি করেছে যে, সমীক্ষা এবং তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া সমস্ত নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, সরকার হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুসরণ করেই এই তালিকা তৈরি করেছে এবং যদি কোনো সমস্যা থাকে তবে তা সমাধান করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আপাতত, সকলের নজর থাকবে ৩১শে জুলাইয়ের দিকে, যখন আদালত এই মামলার পরবর্তী শুনানি করবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ রাজ্যের চাকরিপ্রার্থী এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি করেছে। এই মামলার চূড়ান্ত রায় পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।