চাকরি

WBSSC Case News: এসএসসি মামলায় নতুন মোড়! গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ভাতা সংক্রান্ত মামলার রায় স্থগিত রাখল হাইকোর্ট

WBSSC Case News: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদে চাকরি হারানো কর্মীদের রাজ্য সরকারের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আইনি লড়াই অব্যাহত। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে দু’পক্ষের জোরালো সওয়াল-জবাবের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে, চাকরিহারাদের ভাতার ভবিষ্যৎ আপাতত আদালতের রায়ের উপরই নির্ভর করছে।

ঘটনার প্রেক্ষাপট

২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল হয়। এই চাকরিহারাদের মধ্যে থাকা গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ২৫,০০০ টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসিক ২০,০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা, যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে শোরগোল শুরু হয়েছে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ ও সওয়াল-জবাব

শুনানির সময় আদালত কক্ষে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে চলে তীব্র আইনি বিতর্ক। রাজ্যের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও হয় সওয়াল।

  • রাজ্যের প্রশ্ন: রাজ্যের অ্যাডভোকেট এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে মামলাকারীদের স্বার্থ ঠিক কীভাবে জড়িয়ে রয়েছে? কেন তাঁরা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবেন?”
  • মামলাকারীদের যুক্তি: মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এর তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁর প্রধান যুক্তিগুলি ছিল:
    • সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা: তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ওই কর্মীদের চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই নির্দেশের অন্য মানে করা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ রয়েছে এমন বিষয়ে আইনসভা বিপরীত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।”
    • জনগণের টাকার প্রশ্ন: শামিম আরও যুক্তি দেন, “কর দেন এমন যে কোনও নাগরিক সরকারের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। জনগণের টাকা কোথায় এবং কীভাবে খরচ হচ্ছে, তা জানার অধিকার সকলের রয়েছে। ফলে এই মামলায় মামলাকারীদের স্বার্থও সরাসরি জড়িত।”
  SSC SLST: "আন্দোলন করলে ১৪ হাজারে নিয়োগ," SSC চেয়ারম্যানের মন্তব্যে বিতর্কের ঝড়!

পূর্বে এই মামলাতেই সিনিয়র আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করে বলেছিলেন যে, যারা দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের বেতনের টাকা ফেরত দেওয়ার বদলে কীভাবে সরকার জনগণের করের টাকা থেকে ভাতা দিতে পারে?

দু’পক্ষের বিস্তারিত সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলার রায়দান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

ভবিষ্যৎ কী?

হাইকোর্ট রায়দান স্থগিত রাখায়, চাকরি হারানো গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা পাওয়ার বিষয়টি আপাতত বিশ বাঁও জলে। আদালতের চূড়ান্ত রায়ের পরেই এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারিত হবে। এই মামলাটি কেবল চাকরি হারানো কর্মীদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না, বরং রাজ্য সরকারের নীতি নির্ধারণ এবং জনগণের টাকার ব্যবহারের স্বচ্ছতার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে থাকবে। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ও চাকরিপ্রার্থী মহল অধীর আগ্রহে এই রায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button